নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে একদশক পর নিজ জন্মভূমি কক্সবাজারের মাটিতে পা রাখলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় তাকে বহনকারী বিমানটি কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এসময় প্রিয় নেতাকে স্বাগত জানাতে সকাল থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরসহ আশপাশের এলাকায় বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে পুরো বিমানবন্দর এলাকা ও বিমানবন্দর সড়ক জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এ সময় শহীদ স্মরণী, থানা রোড, বিমানবন্দর সড়ক, ঝাউতলা এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সময় বাড়ার সাথে সাথে লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে বিমানবন্দর সড়ক। কয়েক কিলোমিটার জুড়ে রাস্তার দুপাশে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান নেতাকর্মীরা। হাতে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত দেখা গেছে নেতাকর্মীদের। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে পুরো কক্সবাজার শহর ও কক্সবাজার থেকে চকরিয়া ও পেকুয়া পর্যন্ত সড়ক মহাসড়কে তোরণ-ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।এসময় বিমানবন্দরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক এমপি লুৎফর রহমান কাজল, জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্নাসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা সালাউদ্দিন আহমেদকে স্বাগত জানান। পরে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে তিনি চকরিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। সেখানে চকরিয়া উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় যোগ দেন।
চকরিয়ার সংবর্ধনা সভা শেষে নিজ জন্মভূমি পেকুয়া উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় যোগ দেন।
কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী জানিয়েছেন, মানুষের এমন বাধভাঙ্গা স্রোত ইতিপূর্বে কক্সবাজারে দেখা যায়নি। সালাহউদ্দিন সাহেবকে মানুষ ভালবাসে, হৃদয়ে ধারণ করে এটাই তার প্রমাণ।
জানা যায়, এই সফরে তিনি সপ্তাহখানেক কক্সবাজারে অবস্থান ও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, তাদের কবর জিয়ারত করবেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনে নিপীড়ীত নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৪ই জুন কক্সবাজারে জেলা জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। ২০১৫ সালের ১০ই মে রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি ভবন থেকে তিনি নিখোঁজ হন। দুই মাস একদিন পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরের গলফ কোর্স ময়দান থেকে উদ্ধার হন তিনি। পরে ৫ই আগস্ট সরকারের পতনের কয়েক দিন পর ঢাকায় ফিরেন তিনি।
তিনি কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন থেকে দুইবার (১৯৯৬ ও ২০০১) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদও একবার (২০০৮) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।