নিজস্ব প্রতিনিধি: শনিবার ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে নীতি আয়োগের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিরোধী শিবির ‘ইন্ডিয়া’র সাত জন মুখ্যমন্ত্রী সেই বৈঠক আগে থেকেই বয়কট করলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব অ-বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোর প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে কথা বলতেই তিনি বৈঠকে যাবেন। কিন্তু সেই বৈঠকের মাঝপথেই তাকে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। বাইরে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ‘বৈঠক বয়কট করে ঠিক করেছি। পশ্চিমবঙ্গের মাথা নত করতে দিইনি।’সেই সঙ্গে তিনি জানান, রাস্তা, আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজের প্রসঙ্গও তুলেছেন নীতি আয়োগের বৈঠকে। উত্তরবঙ্গ প্রসঙ্গ নিয়েও সরব মমতা। তিনি বলেন, ‘ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশনের কথা বলেছি। উত্তরবঙ্গ নিয়ে এটা হওয়া উচিত। তিস্তার পানি চলে গেলে পানি পাবে না উত্তরবঙ্গ। তিস্তার পানি বাংলাদেশে চলে গেলে গ্রীষ্মকালে, শীতকালে উত্তরবঙ্গের মানুষ কী পাবে?’ রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করেই ফরাক্কা চুক্তির পুনর্নবিকরণ করা নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।একইসঙ্গে ’বিমানবন্দরে দাঁড়িয়েই তিনি অভিযোগ করলেন, “আমার আগে চন্দ্রবাবু নায়ডু বলেছে ২০ মিনিট। অসম, অরুণাচল, ছত্তিশগড়, গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীরা কেউ ১৫ মিনিট বলেছে, কেউ ১৬ মিনিট বলেছে, কেউ ২০ মিনিট বলেছে। আর আমারটা যেই পাঁচ মিনিটে পড়তে যাবে সঙ্গে সঙ্গে বেল টিপে টিপে ‘স্টপ’ স্টপ স্টপ’ বলে দেয়া হল।” মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এরপরই তিনি ওয়াকআউট করে চলে আসেন। নীতি আয়োগের বৈঠক থেকে বেরিয়েই মমতা দাবি করেছিলেন, তার মাইক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কেন্দ্র অবশ্য মমতার মাইক বন্ধের অভিযোগ অস্বীকার করছে। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর তরফে টুইট করে দাবি করা হয়েছে, নীতি আয়োগের বৈঠকে তার মাইক বন্ধ করে দেয়ার যে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সেটা বিভ্রান্তিকর। কলকাতায় ফিরে কেন্দ্রের বক্তব্যেরও জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার বৈষম্যের অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘শনিবারের বৈঠকে বিরোধীদের কেউ যায়নি। আমি গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম সকলের হয়ে কথা বলব। তিন-চার মিনিটে যা পেরেছি তাই বলেছি।’ভবিষ্যতে নীতি আয়োগের বৈঠকে আর যোগ না-ও দিতে পারেন, তার ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘এর পর থেকে ভাবতে হবে। আদৌ ওদের বৈঠকে সম্মানের সঙ্গে যাওয়া উচিত কি না। সম্মান না পেলে অসম্মানিত হতে আমি যাব না।’সেই সঙ্গে তিনি জানান, রাস্তা, আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজের প্রসঙ্গও তুলেছেন নীতি আয়োগের বৈঠকে।