ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা একটি কৃষি নির্ভর এলাকা। এখনকার জমি সমতল ও উর্বর হওয়ায় ফসল উৎপাদনে খরচ কম সেই সাথে উৎপাদন বেশি। এই ধারাবাহিকতায় এবার বড় মৌসুমে কৃষক ভালো ধান উৎপাদন করেছে। কৃষকের ঘরে রয়েছে পর্যাপ্ত সোনালী ধান।কৃষক পরিশ্রম করে ধান উৎপাদন করেছে আর সেই ধান বিক্রি করতে সহজ করে দিয়েছে বর্তমান সরকারের আধুনিক কৃষিবান্ধব নীতি।সরকারের এমন আধুনিক উন্নত কৃষিবান্ধব নীতির সুফল পাচ্ছে কালীগঞ্জের সাধারণ কৃষকরা। তারা কৃষি কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনে (কৃষি অ্যাপসের) মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে আবেদন করেছে। এরপর সঠিক যাচাই-বাছাইেয়ের পর প্রকৃত কৃষকরা লটারিতে বিজয়ী হয়েছে। ধান বিক্রির অনলাইন লটারির স্বচ্ছতার সাথে মনিটরিং করেছে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহাদী হাসান শিহাব। এরপর বিজয়ী কৃষকরা সরাসরি সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করে ব্যাংকের চেক বুঝে নিচ্ছেন। কোন প্রকার হয়রানি সিন্ডিকেট ও দালাল মুক্তভাবে খাদ্য গুদামে ভালো দামে ধান বিক্রি করতে পেরে কৃষকের মুখে যেন প্রশান্তির হাসি। জানা যায় কালীগঞ্জ সরকারি খাদ্য গুদাম বোরো ধান সংগ্রহ মৌসুমে এবার ৪০৫ জন কৃষক লটারিতে বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ী কৃষকের মধ্যে থেকে সরকার নির্ধারিত ১২১৫ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে । বিজয়ী প্রতিটা কৃষক গড়ে ৩ টন অর্থাৎ ৭৫ মন করে ধান বিক্রি করতে পারবে। ইতিমধ্যে ২১২ জন কৃষকের নিকট থেকে ৬৩৬ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। বাকি ধান কেনার প্রস্তুতি চলমান রয়েছে। সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে পেরে উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের কৃষক ইয়াকুব মন্ডল জানান, অনলাইনে লটারির করে ধান দেওয়ার অনুমতি পেয়েছিলাম সরকারের গুদামে ৭৫ মন ধান বিক্রি করে বেশ ভালো দাম পেয়েছি।এরকম হলে সামনে আরো বেশি ধানের চাষ করবো। এছাড়া খোর্দ্দ রায়গ্রামের গ্রামের কৃষক তাপস ঘোষ বলেন,নিজের জমিতে ধান চাষ করেছি সেই ধান সরকারের কাছে বিক্রি করে ভালো লাভ করেছি।এমন সুযোগ আগে পায়নি।দেবরাজপুর গ্রামের ক্ষুদ্র কৃষক ছাবিনা বেগম জানান, কষ্ট করে ধান চাষ করেছি। আবার সেই ধান সরকারের ঘরে বিক্রি করে ভালো টাকা পেয়েছি। এর থেকে ভাল সুযোগ আর হয় না। ব্যাপারি মহাজনদের কাছে হাটে ধান বিক্রি করতে গেলে ওজনে কম দেখানো আর দাম কম পেতাম। এখন আর এ সমস্যা হয় না। এদিকে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় সরকারি ভাবে ধান কেনার কথা শুনে বিভিন্ন গ্রামে কৃষকদের মাঝে ধান চাষের আগ্রহ অনেক বেড়েছে।ধান বিক্রির বিষয়ে কালীগঞ্জ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি এল এসডি) নাঈমুল হাসান মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান,আমাদের খাদ্য গুদামে অত্যান্ত স্বচ্ছতার সাথে ধানের মান যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে কৃষকের থেকে ধান রাখি। এছাড়া কৃষকের ছবিযুক্ত ভোটার আইডি কার্ড দেখে চেকের মাধ্যমে ধানের মূল্য পরিশোধ করি। সরকার নির্ধারিত সময় আগস্ট মাসের মধ্যে গোডাউনে সমস্ত ধান কেনা শেষ হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। ধান কেনার বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার বলেন প্রকৃত লটারি বিজয়ী কৃষক সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে পারছে। এটা একটা সময়োপযোগী আধুনিক পদ্ধতি। তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান বিক্রি সমাপ্ত হবে বলে আশা রাখেন।এবিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, সরকারের কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনা হলো যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে আগামী মৌসুমে আরো বেশি ভালো বোরো ধান উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।তিনি বলেন কৃষকের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ও যেকোন ফসল উৎপাদনের জন্য তিনি মাঠ পর্যায়ে কাজ করবেন। কারণ বর্তমান সরকার কৃষি উন্নয়নের উপর অনেক বেশি কাজ করছেন।