সাহাব উদ্দিন (রাফেল) নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জীবনের প্রথম বলা শব্দ মা। সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত সন্তানের কল্যাণ কামনায় যিনি পরিশ্রম করেন, তিনি আর কেউ নন তিনি হলেন মমতাময়ী ” মা।
মা-শব্দটি পৃথিবীর মধুরতম ডাক। মা শব্দের অতলে লুকানো গভীর স্নেহ, মমতা আর পৃথিবীর সবচেয়ে অকৃত্রিম ভালোবাসা শৈশব থেকে আনন্দ-বেদনা-ভয় কিংবা উদ্দীপনা-প্রতিটি মানবিক অনুভূতিতে জড়িয়ে থাকে মায়ের নাম। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের সবশেষ আশ্রয়স্থল মায়ের আঁচল।প্রতি বছরের মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার বিশ্বব্যাপী এই দিবস পালন করা হয়। এ দিনে গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হন মায়েরা। কেননা তাদের কষ্ট আর সীমাহীন বেদনায় ফসল হিসেবে প্রতিটি সন্তান পৃথিবীর আলো দেখে।সেজন্যই প্রতিটি মানুষের কাছেই পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর এবং প্রথম ডাকটি হচ্ছে ‘মা’। মাত্র এ একটি শব্দের মধ্যেই জড়িয়ে আছে পরম গভীর স্নেহ-মমতা, দরদ, ভালোবাসা।জানা যায়, মা দিবসের সূচনা হয়েছিল প্রাচীন গ্রিস। সেখানে প্রচলিত ছিল মাতৃরূপী দেবী সিবেল ও দেবী জুনোর আরাধনা। এছাড়া ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যে প্রচলিত ছিল মাদারিং সানডের মতো বেশ কয়েকটি আচার-অনুষ্ঠান। সব সময় মায়েদের সম্মানে মাদারিং সানডে পালিত হতো নির্দিষ্ট একটি রোববার।আধুনিক যুগে ১৯০৭ সালের ১২ মে প্রথম বার আমেরিকার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্রাফটন শহরে ‘মাদার্স ডে’ বা মা দিবস পালিত হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে ভার্জিনিয়ায় অ্যান নামে এক শান্তিবাদী সমাজকর্মী ছিলেন। তিনি নারী অধিকার নিয়ে কাজ করতেন। তিনি ‘মাদারস ডে ওয়ার্ক ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ছোট ছোট ওয়ার্ক ক্লাব বানিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের এগিয়ে নিতে চেষ্টা করতেন। নারীদের স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করতেন। অ্যান ছিলেন খুবই ধর্মপ্রাণ। অ্যানের একটি মেয়ে ছিল, যার নাম আনা মারিয়া রিভস জার্ভিস।একদিন ছোট মেয়ের সামনেই অ্যান হাত জোড় করে বলেছিলেন ‘আমি প্রার্থনা করি, একদিন কেউ না কেউ, কোনো মায়েদের জন্য একটা দিন উৎসর্গ করুক। কারণ তারা প্রতিদিন মনুষ্যত্বের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে চলেছেন। এটি তাদের অধিকার।মায়ের সেই প্রার্থনা হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যায় অ্যানাকে। অ্যানের মৃত্যুর দিনটিকে সারাবিশ্বের প্রতিটি মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন তিনি। তার পর থেকে মায়েদের প্রতি সম্মানে পালিত হয়ে আসছে মা দিবস। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা দিবস’ ঘোষণা করেন।