আপন সরদার মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পাঁচগাও ভূমি অফিস ঘেরাও করেছে স্থানীয়রা। নামজারি সহ সকল ধরনের ভূমি ফি বেশি নেওয়ার পতিবাদে আজ বুধবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১২ টার দিকে ওই অফিস ঘেরাও করে শতাধিক ভুক্তভোগী। এ সময় তারা ভূমি অফিসে নুরুল আমিন নামের এক দালালকে দেখে ওই দালাল এবং ভূমি কর্মকর্তার উপর চড়াও হয়। এ সময় ভূমি কর্মকর্তা নুরুল আমিনকে অফিস হতে চলে যেতে বলে নিজেও ভূমি অফিস হতে বেরিয়ে পরেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পাচগাঁও ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মাহমুদ আলম ও অফিস সহকারী লিজা দীর্ঘদিন যাবত ওই ভূমি অফিসে নামজারি বাণিজ্য সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। যেকোনো নামজারি নিয়ে গেলে তারা ১০ হাজার হতে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাবি করেন। কাঙ্খিত টাকা না পেলে নামজারি করে দেন না। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অফিস সহকারী লিজা আক্তার দীর্ঘ ১১ বছর যাবত ওই ভূমি অফিসে কর্মরত আছেন। সে দলিললের নকল উঠানো হতে শুরু করে ভূমি অফিসে বসে সকল ধরনের ভূমি বাণিজ্য করে থাকেন। বিনিময়ে গ্রাহকদের কাজ হতে হাতিয়ে নেন হাজার হাজার টাকা। অফিসে নতুন কোন তহসিলদার আসলেই লিজা ওই তহসিলদারকে নিয়ে ভুমি বাণিজ্যে নামেন মূলত এই লিজার কারণেই দীর্ঘদিন যাবত হেনস্থার শিকার হচ্ছেন এই এলাকার লোকজন বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।
খোকন মোল্লা বলেন, আমার সাড়ে ৩ শতাংশ জমি নামজারি করতে লিজার সাথে ত্রিশ হাজার টাকা কন্টাক্ট হয়েছিল। পরে সে বলে টাকা দিবেন ৫০ হাজার। কম হলে নাম জারি করে দিবনা। পরে আমি পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে নামজারি নিতে বাধ্য হই।
মসু হালদার বলেন, আমার দুইটা নামজারি কইরা দেওয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা নিছে। একটা নাম জারি কইরা দিছে আরেকটা না দিয়া ৮মাস যাবত ঘুরাইতাছে।
নবী নূর বেপারী (৮০) বলেন, আমি নামজারি করতে ভূমি অফিসে গেছি আমার কাছে ২০ হাজার টাকা চাইছে লিজা। আমার কাছে টাকা নাই তাই আমি আমার জমি নামজারি করতে পারছি না।
আলমগীর মাদবর বলছন, আমরা ভূমি অফিসে কাজকর্ম করতে আসলে আমাদের হয়রানি করে। প্রচুর টাকা চায়। আমরা গরিব মানুষ আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ। আমরা এত টাকা কোথায় পাবো। আমি সাড়ে আট শতাংশ জমি নামজারি করতে গেছি আমার কাছে লিজায় ১৫০০০ টাকা চায় । সম্পত্তি যত বেশি হয় তাদের কাছ থেকে আরও বেশি টাকা চায়।
মিজান মোল্লা বলেন আমার বাড়ি নামজারি করতে দেড় লাখ টাকা নিছে। একটা জমি নামজারি করতে ৩৩ হাজার টাকা নিছে লিজা। কাজ করতে গেলেই তারা বলে এসিলেন্ট অফিসে দেওয়া লাগে ভূমি অফিসে দেওয়া লাগে বলে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা দাবি করে। পর্চা আনতে গেলে ৩ হাজার টাকা দেওয়া লাগে। দশ বছর যাবত এই অফিসের পিয়ন লিজা আছে। ওই এই এলাকার মানুষের সম্পর্কে সব জানে। মানুষ গেলেই এসিল্যান্ডকে বলে স্যার ওর টাকা আছে ২০ হাজারের নিচে ৩০ হাজারের নিচে কলম ধইরেন না।
রতন মোল্লা বলেন, নামজারি করতে বেশি টাকা নেয় দেইখা আমরা এখন ভূমি অফিসে যাই না।
আয়নাল দেওয়ান , আমরা নামজারি করতে গেলে জোর জুলুম শুরু করে। নামজারি করতে গেলেই ৩০-৪০ হাজার টাকা চায়। মানুষকে কোন মূল্যায়ন করে না বিভিন্নভাবে হয়রানি কর।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত লিজা তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন আমরা কারো কাছ হতেই বেশি টাকা নেইনা।
মানুষতো আপনার সামনেই বলতেছি আপনি বেশি টাকা নেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এ ব্যাপারে পাঁচগাও ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মাহমুদ আলম বলেন আমি কারো কাছ থেকে ই নামজারীর বেশি টাকা নেই নি আমার অফিসে বসে লিজা এই ধরনের কাজকর্ম করে কেউ তো আমাকে আগে অবহিত করেনি।