ঝিনাইদহ সংবাদদাতাঃ দেশব্যাপী শুরু হয়েছে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি। যা বর্তমানে ৪০ দিনের কর্মসূচি নামে পরিচিত। ঝিনাইদহ জেলার ৬৭ টা ইউনিয়নে গত ১৫ ই এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এই ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজ। তার মধ্যে হরিণাকুন্ডু উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়ন অন্যতম। এই ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসূচিতে ২৩৭ জন শ্রমিক ৩৩ দিন কাজ করবে। তাদের প্রতিদিনের মজুরি পাবে ৪০০ টাকা। তাছাড়া প্রকল্প প্রধানের মজুরি দিন ২০০০ টাকা। স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগের ভিত্তিতে দৌলতপুর ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসূচি ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি লক্ষ্য করা গেছে।এই ইউনিয়নের প্রথম প্রকল্প ১নম্বর ওয়ার্ডের ফতেপুর গ্রামের মতিউর রহমানের বাড়ি হতে মনোয়ার মাস্টারের বাড়ি ও জুলহক মোল্লার বাড়ি হতে ঝগড়া ভাগার পর্যন্ত রাস্তা মাটি দ্বারা উন্নয়ন। এখানে পাওয়া গেল মাত্র ১৭ জন শ্রমিক। কাজ করা শ্রমিকরা জানিয়েছে তারা ১৫ তারিখ থেকে এখানে কাজ করছে ২৬ জন শ্রমিক। আজ একটু সমস্যার কারণে কয়েকজন শ্রমিক নেই। তবে শুরুতেই তারা ২৬ জন শ্রমিক কাজ করছে বলে তারা জানান।দ্বিতীয় প্রকল্প ২ নম্বর ওয়ার্ডের পার দখলপুর আনসারের বাড়ি হতে রাস্তা মাটি দিয়ে উন্নয়ন। এই প্রকল্পকে দেখা গেল বর্তমানে ২৬ জন শ্রমিক কাজ করছে। তবে শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেল যে তারা এখানে ৩৩ জন শ্রমিক থাকার কথা ছিল তবে আজ একটু সমস্যা হয়েছে তাই কয়েকজন শ্রমিক নাই। তারা প্রথম থেকেই ৩৩ জন শ্রমিক কাজ করছে বলে তারা জানান।তৃতীয় প্রকল্প ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হিঙ্গারপাড়া নতুন ব্রিজ হইতে চরের মাঠ অভিমুখে রাস্তা মাটি দিয়ে উন্নয়ন। এই প্রকল্পে যে শ্রমিকরা কাজ করছে তারা জানালো তাদের ২৬ জন শ্রমিক থাকার কথা কিন্তু উপস্থিত পাওয়া গেল মাত্র ১৮ জন শ্রমিক।দৌলতপুর ইউনিয়নের ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্পে যেখানে ২৩৭ জন শ্রমিক কাজ করার কথা সেখানে শ্রমিক পাওয়া গেল মাত্র ৮৫ জন বাকি ১৫২ জন শ্রমিকের কোন হদিস পাওয়া গেল না। ওই শ্রমিকদের সাথে কথা বলে আরও জানা গেছে যে ৪০ দিনের কর্মসূচিতে বরাবরই এই ইউনিয়নে ৮৫ জন শ্রমিক কাজ করে আসছে। এবং খাতা কলমে দেখানো হয়েছে ২৩৭ জন করে শ্রমিক কাজ করে।৮৫ জন শ্রমিক ৩৩ দিন কাজ করলে তাদের কাজের পারিশ্রমিক দাঁড়াবে ১১ লক্ষ বাইশ হাজার টাকা তাহলে মোট বরাদ্দের ৩১ লক্ষ ২৮ হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে থেকে কি ২০ লক্ষ ৬৪০০ টাকা রোজ যাবে? না পুরা বিল পাস হবে?এই প্রসঙ্গে দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আজাদের সাথে কথা বললে সে জানায় যে বোর ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়েছে তাই শ্রমিকরা আসছে না সেই জন্য অল্প কিছু শ্রমিক কাজ করছে।এই প্রসঙ্গে হরিণাকুন্ডু প্রকল্প অফিসের উপ- প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের কথা বললে সে বলে যে যেহেতু শ্রমিক উপস্থিত নেই আমরা বিল করার সময় যে কয়জন শ্রমিক উপস্থিত আছে সেই কয়েকজনের বিল দিব তার বেশি দেব না। তবে আমি ২দিন গিয়েছিলাম আপনারা যা বলছেন তা থেকে বেশি শ্রমিক উপস্থিত পেয়েছি বলে তিনি দাবি করেন।এই প্রসঙ্গে হরিনাকুন্ডু উপজেলার প্রকল্প কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন যারা কাজ করবে না তারা টাকা পাবে না। প্রকল্প বাবদ ৩১ লক্ষ ২৮ হাজার ৪০০ টাকা বরাদ্দ হলেও বাকি ২০ লক্ষ ৬৪০০ টাকা ফেরত যাবে। এই ব্যাপারে পিআইসি হাজিরা দেবে এবং ট্যাগ অফিসারও সংশ্লিষ্ট থাকবে।প্রকল্প অফিস সূত্রে আরও জানা গেছে যে ২০ দিনের কাজ শেষ হলে প্রথম ধাপের বিল দেওয়া হবে। প্রকৃতপক্ষেই যে শ্রমিকরা কাজ করছে কি করছে না এবং সকল শ্রমিকের বিল দেওয়া হবে কি হবে না সেই জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে এই ইউনিয়নের এই প্রকল্পের প্রথম বিলবরাদ্দ পাস হওয়া পর্যন্ত।