শরীয়তপুর প্রতিনিধি :শরীয়তপুর সদর ১০০ শয্যা* বি***শিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় মুসাফির নামের এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৩ই মার্চ, ২০২৪ইং) আনুমানিক রাত ৮ ঘটিকার সময় এ ঘটনা ঘটে। শিশু মুসাফির শরীয়তপুর পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ডের মো.রাজিব শেখ ও রুবিনা আক্তার দম্পতির ছেলে।
অভিযুক্ত ডাক্তার হলেন সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মোঃ শরীফ উর রহমান। এই ডাক্তারের বিরুদ্ধে রোগীদের প্রতি দায়িত্ব অবহেলার একাধিক অভিযোগ উঠেছিল এর আগেও।
শিশু মুসাফির (৪) এর আত্মীয় স্বজনদের ও সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত দুই দিন যাবত শিশুটির পেটে গ্যাস ও ঠাণ্ডা জনিত সমস্যা নিয়ে শ্বাস কষ্টে ভুগছিলো। গত বুধবার দুপুরের দিকে শিশু মুসাফির কে নিয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন তার মা রুবিনা বেগম। এসময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের দায়িত্বে ছিলেন ডাঃ শরীফ-উর রহমান। তাৎক্ষনিক শিশুটিকে ভর্তি করা হলে শিশুটির প্রাথমিক অবস্থা দেখে একটি ঔষধ লিখে দেন তিনি। পরে ঔষধটি খাওয়ানোর পর থেকেই শিশুটি আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে মা রুবিনা বেগম ও স্বজনরা সহ ডিউটিতে থাকা নার্স সিমা বৈদ্য কয়েকবার কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শরীফ-উর রহমান’কে ডেকে আনতে গেলে তিনি এবিষয়ে কোন কর্নপাতই করেনি। উল্টো ডাঃ শরীফ-উর রহমান শিশুটির অক্সিজেন মাস্ক খুলে তার কাছে নিয়ে আসতে বলেন। এরপরই রাত ৮ ঘটিকার সময় শিশু মুসাফির মারা যান। মুসাফিরের মা-বাবা গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট অভিযোগ করে বলেন যে, তার সন্তান যখন অসুস্থ হয়ে ছটফট করছিলো তখন তিনি দৌড়ে নিচে গিয়ে ডাক্তার’কে উপরে আনার অনেক চেষ্টা করলেও ডাক্তার তার ডাকে কোন সারাদেননি এবং শিশুটিকে চিকিৎসা দিতেও আসেনি। এব্যাপারে নিহত মুসাফির এর পিতা মোঃ রাজিব শেখ বলেন, ডাক্তারকে আমিও একাধিকবার ডেকেছিলাম কিন্তু সে আমার কথায় কোন গুরুত্বই দেয়নি। হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স ডাক্তারকে ডেকে আনার জন্য গেলে তারপরও ডাক্তার আসেনি। আজ আমার ছোট্ট ছেলেটা চিকিৎসার অবহেলায় মারা গেলো। সঠিক সময় চিকিৎসা করলে হয়তোবা আমার মুসাফির বেচে থাকতো। এইসব ডাক্তাররা মানুষকে বাচাতে নয়, মেরেফেলতে খুবই ভালোবাসে। এইসব ডাক্তারদের বিচার আল্লাহ একদিন করবেন।
এ সময় কর্তব্যরত ডাঃ শরীফ উর রহমানের অবহেলার বিষয়টি সামনে এনে হাসপাতালের কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স সীমা বৈদ্য বলেন, শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর আমি দেখলাম শিশুটির পেট ফুলে গেছে। আমি রোগীর স্বজনদের সহ ওয়ার্ড বয়কে পাঠিয়ে ছিলাম ডাক্তার আনার জন্য এবং আমি নিজেও ডাক্তার’কে ডাকতে গেলে ডাক্তার আমাকে শিশুটির অক্সিজেন খুলে তার কাছে নিয়ে আনার জন্য বলেন। ততক্ষণে শরীফ স্যারের দায়িত্ব শেষ হয়ে গেলে অন্য ডাক্তার এসে দেখে বলেন শিশু মুসাফির (৪) মারা গেছে। প্রথমেই ডাক্তার আসলে হয়ত কোনো ওষুধ দেয়া যেতো।
এদিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার, (RMO) মোসাঃ মিতু আক্তার বলেন, আমি ইতোমধ্যে একটি শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঐ ডাক্তারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।