স্টাফ রিপোর্টার : একটি প্রবাদ আছে,যার খেতের ধান,তার মুরগির রান । বিকালে কালকিনি ইউনিয়নের নাছিরগঞ্জ বাজার এলাকায় মেঘনা নদীতে ১৫/২০ টা রকেট নৌকা সহ ছোট নৌকা দিয়ে জেলেদের মাছ ধরতে দেখা যায় । এ সময় কয়েক জন জেলে, জেলেদের সহায়তায় চাল বিতরনের অনিয়ম নিয়ে গল্প করছিলেন।তারা বলতে শুনা গেছে, প্রতিবারের মত এবারো কালকিনি ইউনিয়নে টাকা ছাড়া কেউ জেলেদের সহায়তায়র চালের কার্ড পাননি।হারুন মারা গেছে তার কাছ থেকেও কালকিনি ইউপি সদস্য শাহাজান ০২ হাজার টাকা নিয়েছেন,চালের কার্ড দিবে বলে। সাংবাদিক পরিচয় জেনে তারা প্রতিবেদকের কাছে তাদের সকল পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ করেন।তবে তাদের মধ্যে থেকে কালকিনি ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবক লিগের সভাপতি জানান,চেয়ারম্যান সরাসরি কারোর কাছ থেকে টাকা নেননি, তার নিজস্ব কিছু লোক দিয়ে টাকা কালেকশন করে, কালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের হয়ে জেলেদের কাছ থেকে জনপ্রতি ০২(দুইহাজার) থেকে তিন হাজার টাকা করে নিয়েছেন, শাহাজান মেম্বার,মজিদ মেম্বার,লিটন মেম্বার,বাসার মেম্বার,কাশেম রানা, জাকির হোসেন সহ চেয়ারম্যানের অনেক সহযোগী। কালকিনি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো:ইব্রাহিম ( জেলে) জানান,কালকিনি ইউনিয়নে জেলেদের থেকে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা নিয়েছে। আরেক জেলে আনোয়ার জানান, ফারুক মাঝি তার কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়েছেন, তারপর তিনি জেলেদের সহায়তায় চালের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। জেলেদের অভিযোগ চেয়ারম্যানরা তাদের কিছু লোকজন দিয়ে চালের টোকন বিক্রি করে, সেটা আবার তারা জন প্রতি এক হাজার,পাঁচ শত থেকে ০২( দুইহাজার) টাকার মত বিক্রি করে। তাই প্রকৃত জেলেরা চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়।এ ছাড়া খোজ নিয়ে দেখা যায় প্রকৃত জেলেদের নাম তালিকায় খুবই কম। চর কালকিনি ইউপি চেয়ারম্যান জানান,তিনি এই বিষয়ে কিছু জানেন না, তবে চালের টোকন কারা বিক্রি করে তাদের ধরার অনুরোধ করেন।মার্টিন ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো:তারেক রহমান রকি জানান,এইবারেও জেলে কার্ডের চাল জেলেরা,টাকা দিয়ে কিনে নিতে হয়েছে।কত অসহায় মুখ দেখেছি, নিজে ব্যাতিত হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। মার্টিন ইউনিয়নে জেলেদের কাছ থেকে কমবেশি টাকা নিয়েছে। তবে সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টি করেছে কালকিনি ইউনিয়ন জন প্রতি ৩০০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। সাহেবের হাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো:ছিদ্দিক মাতাব্বর জানান, মোঃ মানিক হোসেন ও শরীফ (ওরফে কানা শরিফ), মোঃ ইকবাল হোসেন মাতাব্বর,ছকিদার সহেল, জাহাঙ্গীর মাঝি, এরা চেয়ারম্যানের হয়ে জেলেদের কাছ থেকে জনপতি ০২ (দুই হাজার) থেকে তিন হাজার টাকা করে নিয়েছেন, জেলে কার্ড বিক্রি করার জন্য, চেয়ারম্যানের সংগে গোপন চুক্তি হয়েছে, কার্ড প্রতি চেয়ারম্যান কে তারা টাকার একটা অংশ দিয়ে দেয়।উক্ত সাহেবেরহাট ইউনিয়নে অসংখ্য নাম জেলে তালিকায় পাওয়া যায়, যারা নিজে জেলে হওয়া দুরের কথা, তার চৌদ্দ্ব গোষ্ঠী কখনো জেলে ছিলোনা এবং বর্তমানেও নেই। এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্যজীবীলীগের নেতাগন চেয়ারম্যান এবং উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে দায়ি করেন।জেলে নেতাগন আরো বলেন,উপর মহলে তদবির করে দীর্ঘদিন মৎস্য কর্মকর্তা এই উপজেলায় থাকার কারণে কিছু জেলে এবং চেয়ারম্যানদের সাথে গভীর সুসম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। যার কারনে একই রুপ চিত্র,উপজেলার কালকিনি, সাহেবের হাট, পাটোয়ারীর হাট, চর ফলকন, চর মার্টিন ইউনিয়নে পাওয়া যায় ।উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল কুদ্দুস জানান,জেলেদের সুবিধাভোগীদের তালিকা চেয়ারম্যানরা করেন,তারপরও যদি জেলেরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করে ইউএনও মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস জানান,জেলেদের অভিযোগ পেলে অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।উল্লেখ্য, নিষিদ্ধ সময়ের চার মাস, চার দাপে জনপ্রতি ১৬০(একশত ষাট)কেজি করে বিনা মুল্যে চাল পাওয়ার কথা থাকলেও তা সঠিকভাবে দেওয়া হয়না বলে দরিদ্র জেলেগন ক্ষোভ প্রকাশ করেন ।