ঢাকাবুধবার , ২০ মার্চ ২০২৪
আজকের সর্বশেষ খবর

জাল দলিলের জমি ক্রয় করে জবর দখলের চেষ্টা ! অতিষ্ঠ ভুক্তভোগী ডা: হাসানুজ্জামানের বিরুদ্ধে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন


মার্চ ২০, ২০২৪ ১১:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা:ঝিনাইদহে জাল দলিলের জমি ক্রয় করে জবর দখলের চেষ্টার অভিযোগে ডা: হাসানুজ্জামানের বিরুদ্ধে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছেন এক ভুক্তভোগী পরিবার। গত ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ ঝিনাইদহ সদর আদালতে এ আবেদনটি করেন শেখ আয়ুব রানা। আয়ুব রানা সদর উপজেলার রাউতাইল গ্রামের মৃত: লুৎফর রহমানের ছেলে। জানা গেছে, ৬৪ নং রাউতাইল মৌজার এসএ ৬৩৭, ৬৩৮ ও ৬৩৯ দাগের ৩৮ শতক জমি ১৯৯১ সালের পহেলা জুলাই ৬৫৫২ নং দলিলে ২২ শতক, ১৯৮৯ সালের ২ ডিসেম্বর ৯৯০২ নং দলিলে ১২ শতক এবং ১৯৯০ সালের ৮ ডিসেম্বর তারিখে ১০২৬০ নং দলিলে ১৬ শতক জমি ক্রয় করে ৯৯০২ নং দলিলের ১২ শতক জমিতে বসতবাড়ি এবং পার্শ্ববর্তী বাকি ৩৮ শতক জমিতে মেহগনি গাছ সহ বিভিন্ন গাছ লাগিয়ে ভোগদখল করে আসছেন শেখ আয়ুব রানা । বর্তমানে ৭২ নং খতিয়ানটি ৫৬০ দাগ সৃষ্টি করে ৩৮ শতক জমি চুড়ান্ত আর এস রেকর্ড হয় আয়ুব রানার নামে। কিন্তু এই ৩৮ শতক জমি তৎকালীন সময়ে নিজেদের দাবি করে প্রতিভারানী নামে এক নারী জানান তার স্বামী সুভোধ কুমার ১০৭১৪ নং ও ১২৪০ নং দলিলে খরিদ করেছেন। প্রতিভা রানী এমনটি দাবি করায় দিশেহারা হয়ে দিকবিদিক ছুটতে থাকে ভুক্তভোগী আয়ুব রানা। একপর্যায়ে আয়ুব রানা ঐ দলিলের নকল তুলে ঝিনাইদহ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ২৭৬/২০১০। মামলাটির দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে প্রতিভা রানীর দলিলটি জাল বলে গন্য হয় এবং গত ২০২৩ সালের ৯ মে ৬৪ নং আদেশে একতরফা বিক্রি প্রাপ্ত হন আয়ুব রানা। ভুক্তভোগী শেখ আয়ুব রানা জানান, গত ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের দিকে হঠাৎ ঐ জমির গাছ কেটে শহরের হাসান ক্লিনিকের মালিক ডা: হাসানুজ্জামান প্রাচীর দিতে যায়। সেসময় আমি তাকে বলি আমার জমিতে আপনি কেন প্রাচির দিচ্ছেন। সেসময় ডা: হাসানুজ্জামান এই জমি কিনেছেন বলে দাবি করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শেখ আয়ুব রানার দু’টি স্ত্রী ছিলেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর প্রথম স্ত্রীর মশা নামে এক ভাই ও সুভোধ কুমারের যোগসাজশে ২০০৩-৪ সালের দিকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে আয়ুব রানার বুকে দেশীয় অস্ত্র ধরে একটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেয়।

এদিকে সুভোধ কুমারের স্ত্রী প্রতিভা রাণী ঐ জমির ক্রেতা দাবি করায় আয়ুব রানার মনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। এরপর তদন্তে বেরিয়ে আসে থলের বেড়াল। খোঁজ নিয়ে দেখা যায, ২০০৪ সালে ভুয়া দলিল সৃষ্টি করে ভুক্তভোগী আয়ুব রানার আগের পক্ষের দুই ছেলে মোঃ মাসুদ পারভেজ ও মোঃ মামুনুর রশিদের নামে ৫০ শতক জমি লিখে দেয়া হয়। যে দলিলে একটি সাক্ষর ছাড়া সব গুলোই নকল হাতের সাক্ষর। যার প্রমাণে দলিলে দেখা মেলে, শেখ আয়ুব রানার পরিবর্তে শেখ আইয়ুব রানা নামে সাক্ষর করা রয়েছে।
এদিকে, ২০০৭ সালের দিকে ঐ ৫০ শতক জমি থেকে শেখ আয়ুব রানার প্রথম পক্ষের দুই ছেলে নালিশি ৩৮ শতক জমি ১২৪০ নং দলিলে সুবোধ কুমারের নিকট বিক্রি করে, পরবর্তীতে
সুবোধ কুমার মৃত্যু বরণ করলে স্ত্রী প্রতিভা রাণী ৮৮০/৯-১/০৯ নং মিসকেসের মাধ্যমে নামপত্তন করেন। ২০১১ সালে তিনি মোস্তফা পলাশ ও লিটুর নিকট বিক্রি করেন। উক্ত দলিল গ্রহিতাগণ ১১২১/৯-১/১১ নং মিসকেসের মাধ্যমে তাদের নামে সমান অংশে নাম পত্তন করেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তাদের কাছ থেকে ৮০৮৫ নং কবলা দলিলে খরিদ করেন ডা: হাসানুজ্জামান ভুক্তভোগী আয়ুব রানা জানান, আমার জমি একেরপর এক বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এর কিছুই আমি জানতাম না। তিনি জানান, আমি চাকরি করার সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় থাকতে হয়। আমার অজান্তেই ডা: হাসানুজ্জামান বেশ কয়েকটি বড় বড় মেহগনি গাছ কেটে ঐ জমিতে প্রাচির দেন। এরপর আমি বাঁশ দিয়ে গেট লাগিয়ে তালা মেরে রাখি। প্রথম ও দ্বিতীয় দলিলের বিরুদ্ধে মামলা করায়, দলিল জাল প্রমানিত হলে আমার পক্ষে আদালত রায় দিয়েছে। ডা: হাসানুজ্জামানের সাথে আমার কোন মামলা নেই। তিনি কেন আমার জমি জবর দখল করতে চাচ্ছেন তা আমার বোধগম্য নয়। তিনি জানান ডা: হাসানুজ্জামানের হাত থেকে রক্ষা পেতে আমি চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছি।

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ  বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com ❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।