মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি- প্রসাশনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের ঘাসভোগ গ্রামে সরকারী খালে ড্রেজার বসিয়ে রাতের আধারে মাটি চুরি করছে স্থানীয় ইউপি সদস্য বুলবুল সহ কতিপয় ব্যাক্তি। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে স্থাণীয় কৃষকরা ওই অবৈধ মাটি কাটতে প্রতিরোধ করতে গেলে বুলবুল গংদের ড্রেজার শ্রমিকরা পালিয়ে যায়।
জানাগেছে ,গত এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে সরকারী খালে ড্রেজার বসিয়ে প্রকাশ্যে দিনে রাতে মাটি লুটপাট করছে খিদিরপাড়া ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সেখ বুলবুল আহমেদ, সোরহান ও স্বপন নামের ব্যাক্তি। এতে খালের পাশের কৃষকের জমি ভেঙ্গে খালে বিলিন হচ্ছে। অসহায় কৃষক বারবার প্রতিবাদ জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা । পরে তারা আদালত হতে নিষেধাজ্ঞা আনলেও তাও কর্নপাত করছেনা ওই প্রভাবশালীরা। লৌহজং উপজেলা প্রসাশন মাটি কাটতে নিষেধ করায় গত দুদিন যাবত তারা সরকারী খাল হতে রাতের আধারে মাটি চুরি করছিল।
স্থাণীয়ভাবে জানাগেছে, বুলবুল, সোরহান ও স্বপন নামের ব্যাক্তি সারা বছরই খালের মাটি চুরিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। তারা মোকাজ্জল নামে স্থাণীয় এক ব্যাক্তির কাছ হতে মাটি কিনে ড্রেজার দিয়ে নিচ্ছে বলে দাবী করলেও মোকাজ্জল জানিয়েছে সে তাদের কাছে কোন মাটি বিক্রি করেনি। স্থাণীয় একটি স্কুল ও গলিয়া খোলা ভরাটের নাম করে মাটি কেটে এরা বিভিন্নস্থানে মাটি বিক্রি করছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ডহুরী তালতলা খালের সাথে সংযুক্ত হওয়া ঘাসভোগ এলাকার খালটির সংযোগস্থলের পাশে মিনি ড্রেজার বসিয়ে মাটি কাটছে তারা। যে স্থানে মাটি কাটা হচ্চে তার পাশে ঝুলছে একটি আদালত হতে নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড। এছাড়া খালের পাশের জমি মালিকরা লাল নিশানও টানিয়ে রেখেছেন।
স্থাণীয় কৃষকরা বলেন, তাদের জমির পাশের খালে মাটি কাটার ফলে খালের পাশের হাসেম, হাকিম, রফি গংদের জমির মাটি ভেঙ্গে খালে পরছে। জমি মালিকরা বারবার মাটি কাটতে বারন করা সত্ত্বেও ড্রেজার মালিকরা কর্নপাত করছে না।
এ ব্যাপারে স্থাণীয় শিপন বলেন, অনেকদিন ধরে খালের মধ্যে ড্রেজার বসিয়ে মাটি কাটছে বুলবুল মেম্বার, সোরহান আর স্বপন। এরা সারা বছরই খালের মাটি চুরি করে বেচেঁ এটাই তাদের পেশা। বুলবুল মেম্বার আদম ব্যবসা ও মানব পাচারের সাথেও জড়িত। রাতে মাটি কাটতাছে খবর পেয়ে আমরা গতকাল শুক্রবার রাতে এখানে আসলে বুলবুল মেম্বারের ড্রেজার শ্রমিকরা পালিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে স্থাণীয় মোঃ শরীফ জানান, খালের মধ্যে এক সপ্তাহ ধরে মাটি কাটতাছে। সোরহান আর বুলবুল মেম্বার মিলে এই মাটি কাটছে । আগে দিনে মাটি কাটলেও এখোন রাতের আধারে মাটি কাটছে তারা। এতে আমাদের জমি বাড়িঘর ভেঙ্গে যাচ্ছে।
অপর কৃষক আঃ হাকিম বলেন, সরকারী খালে মাটি কাটার সাথে বুলবুল মেম্বার ও সোরহান জড়িত। মাটি কাটার ফলে আমাগো জমি ভেঙ্গে পরছে। আমরা বারবার মাটি কাটতে নিষেধ করছি তারা কোন কথাই শুনছেনা।
স্থাণীয় কৃষক বৃদ্ধা রফি বলেন, আমার জমির পাশে ড্রেজার বসাইয়া সোরহান আর বুলবুল মেম্বার মাটি কাইটা নিয়ে যাইতেছে। আমি বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা আমাকে কোন পাত্তাই দিচ্ছেনা। পরে আমি আদালত হতে নিষেধাজ্ঞা আনছি তাও ওরা মানছে না।
এ ব্যাপারে খিদির পাড়া ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য অভিযুক্ত শেখ বুলবুল আহমেদ খালে মাটি কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন আমি খালের মাটি কাটার সাথে জড়িত নই। যেখান হতে মাটি কাটা হচ্ছে সেটি সরকারী খাল নয় পাবলিকের জমি। আদম ব্যবসা ও মানব পাচারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন ভবিষৎতে আপনি আমার নাম্বারে আর ফোন দিবেননা । আপনি এলাকায় আসেন বলেও সাংবাদিককে হুমকি প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন বলেন, ওই স্থানের ড্রেজারটি এর আগে বন্ধ করে দিয়ে আসা হয়েছে। এখোন আবার মাটি কাটলে বিষয়টি আমি দেখবো।