জেলা প্রতিনিধি (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুর সদর থানার অদূরে নগদ অফিসের ছাদ থেকে উদ্ধার হওয়া দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের সানসিদ আলম আরজুর (২৪) নামের এক শিক্ষার্থীর। তার মৃত্যু ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। আরজুর কপাল ও গলায় জখমের চিহ্ন রয়েছে।
নিহত আরজুর ময়নাতদন্তের পর সোমবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আনোয়ার হোসেন লাশ মৃতের বড় ভাই ছাত্রলীগ নেতা মো. শাহীন আলমের কাছে হস্তান্তর করেন।
এর আগে, সদর মডেল থানার পুলিশ থানা রোডের নগদ অফিসের ছাদ থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
পুলিশ জিজ্ঞেসাবাদ করতে নিহত আরজুর প্রেমিকা ও তার সাবেক প্রেমিককে থানা হাজতে নিয়ে আসে। রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তারা দু’জন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে থানায়। এখান থেকে সৃষ্টি হয় আরজুর মৃত্যুর রহস্য।
নিহত আরজু সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ভবানীগঞ্জ গ্রামের মৃত মোস্তফার ছোট ছেলে এবং জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহীন আলমের ছোট ভাই। আরজু চট্টগ্রাম এম.ই.এস কলেজ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পাস করে বর্তমানে লক্ষ্মীপুর দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজে অধ্যয়নরত ছিলেন।
আরজুর মৃত্যুতে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়া শোকবার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্যাডে।
আরজুর বড় ভাই মো. শাহীন আলম দৈনিক ভোরের খবরকে বলেন, হঠাৎ দুপুরে আরজুর ফেসবুক থেকে একটি মেসেজ দেওয়া হয় ভাইয়া আরজুকে বাঁচান। সেই থানা রোডের নগদ অফিসে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে।
তাৎক্ষণিক আমি (শাহীন) নগদ অফিসের ছাদের ওপরে দ্রুত এসে দেখি আমার ছোট ভাই আরজু ঝুলে আছে। দিনে-দুপুরে বাজার ভর্তি মানুষ। কিভাবে আমার ভাইয়ের এ অবস্থা হয়েছে। আমি এ উত্তর এখন পর্যন্ত খুঁজে পাচ্ছি না। অনেকবার চিৎকার করার পরও একটি মানুষও ছুটে আসেনি। আরজুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শাহীন আলমের দাবি, তার ভাই (আরজুর) মৃত্যুর সঙ্গে যে কেউ জড়িত থাকতে পারে। প্রশাসনকে প্রকৃত ঘটনা খোঁজে বের করতে হবে।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. শামীম আফজাল দৈনিক ভোরের খবরকে জানান, তারা আরজুকে মৃত পেয়েছেন। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে ফেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বলতে পারবে।
আরজুর কপালে যে দু-একটি জখমের চিহ্ন রয়েছে এমন প্রশ্ন করে জানতে চাইলে চিকিৎসক শামীম বলেন, যারা আরজুকে হাসপাতালে এনেছে তাদের কাছে বিষয়টি (আমি) চিকিৎসক জানতে চাইলে তারা বলেন দুইদিন আগে আরজু মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়। দেখেও বুঝা গেছে ওই জখমের চিহ্ন গুলো পুরনো।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার দৈনিক ভোরের খবরকে বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞেসাবাদ করতে আরজু প্রেমিকা ও এক যুবককে থানায় আনা হয়েছে। বিস্তারিত জেনে এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর মৃত্যুর কারণ জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।