রুবেল শেখ :তৃতীয় গণতন্ত্র সম্মেলন উপলক্ষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দুই বিশেষ সহকারি
বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪
বাংলাদেশের ‘নির্বাচন’ অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে নিজেদের অবস্থান জানান দিলো যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল ( এনএসসি)।
দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় তৃতীয় গণতন্ত্র সম্মেলনের প্রাক পর্যালোচনা উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ ব্রিফিংএ বাইডেন প্রশাসনের পক্ষে এমন অবস্থান ব্যক্ত করেন এনএসসিতে সংযুক্ত প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিশেষ সহকারি এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক সিনিয়র পরিচালক ক্যালি রাজ্জুক।
বুধবার ওয়াশিংটনের ফরেন প্রেস সেন্টারে আয়োজিত এই বিশেষ ব্রিফিংএ আরও বক্তব্য রাখেন এনএসসি’র উপ-সহকারি এবং ইন্টিলিজেন্স এবং নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক সমন্বয়ক মাহের বিটার।
প্রশ্নউত্তর পর্বে অংশ নিয়ে হোয়াইট হাউস করেসপন্ডেট মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান- সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষ তৃতীয় গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাচ্ছেনা বলে আমার ধারণা। আমার প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশে একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজনে বাইডেন প্রশাসনের যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি সত্তেও কেনো আমরা এই জালিয়াতির নির্বাচনের পর দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখছিনা? যেমনটি আমরা দেখেছি নিকারাগুয়া, নাইজেরিয়া, গুয়েতামালা কিংবা কম্বোডিয়ার মতো দেশের বেলায়।
জবাবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিশেষ সহকারি ক্যালি রাজ্জুক বলেন, “আমি শীর্ষ সম্মেলনের আমন্ত্রণের প্রসঙ্গে কথা বলছিনা । কেনোনা এটি এবারের সম্মেলনের আয়োজক দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে সম্পন্ন হবে। কিন্তু নির্বাচন সম্পর্কে আপনার প্রশ্ন সম্পর্কে, আমরা মতামত দিতে চাই, অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের সাথে আমরা একমত যে – নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি। এবং আমরা ব্যাথিত যে, সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে
অংশগ্রহণ করতে পারেনি। রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের বিষয়েও আমরা উদ্বিগ্ন। সামনের দিকে অগ্রসর হতে একটি অবাধ এবং মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তুলতে অভিন্ন লক্ষে পৌছতে বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্ব নিশ্চিতে
প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র । আমরা দুই দেশের জনগণের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাই এবং এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাবো।”
বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দাবিদার ভারতের গণতন্ত্র বিকাশে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন জানতে চেয়ে অপর এক প্রশ্নে মুশফিক বলেন, আমরা দেশটিতে
গণতন্ত্র - মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংখ্যালঘু অধিকার এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি হুমকির
মুখে দেখছি।
জবাবে রাজ্জুক বলেন, “আমরা খুব স্পষ্টভাবে বলেছি যে প্রতিটি গণতন্ত্র আলাদা এবং গণতন্ত্রের কোনো নীলনকশা নেই। আমরা স্পষ্টতই এই বিভিন্ন দেশের সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেছি। আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনের উদ্দেশ্য- আমরা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের উপর খুব মনোযোগী এবং কীভাবে আমরা সর্বোত্তম অনুশীলনগুলি ভাগ করে নিতে পারি এবং গণতন্ত্রকে সুদৃঢ় করতে পারি। আমি ইতোপূর্বে উল্লেখ করেছি যে, ২০২৪ সালটি হচ্ছে সত্যিকার অর্থে নির্বাচনের বছর। এবং তাই আমরা খুব মনোযোগি যুবসমাজের সম্পৃক্ততা নিশিত করার দিকে, যাতে আমরা এই সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের একত্রিত হতে দেখতে পারি এবং বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র বিকাশে পরবর্তী পদক্ষেপে গ্রহণে শীর্ষ সম্মেলনে সেরা অনুশীলনগুলি ভাগ করে নিতে সক্ষম হই।”
প্রসঙ্গত, আগামী ১৮-২০ মার্চ কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের রাজধানী সিউলে বসছে তৃতীয় গণতন্ত্র সম্মেলন । যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন এই সম্মলেনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করবেন। ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট বাইডেন আহুত প্রথম গণতন্ত্র সম্মেলন হতে গণতান্ত্রিক শাসন, মানবাধিকার রক্ষা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ গণতন্ত্রিক বিশ্বের সরকার, সুশীল সমাজ এবং বেসরকারি পর্যায়ে শত শত নেতাদের একত্রিত করে আসছে। তৃতীয় শীর্ষ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে স্পাইওয়্যারের অপব্যবহার প্রতিরোধের বিশ্বব্যাপি প্রচেষ্টা জোরদার।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭