ফরহাদ হোসাইন (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : এবার প্রেমের টানে লক্ষ্মীপুরে এসে বিয়ের পিঁড়িতে মালয়েশিয়ার তরুণী। বিশ্বাস থেকে ভালোবাসার সৃষ্টি। তেমনি সত্যিকারের ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে এবার মালয়েশিয়ার তরুণী নূর আজিরা বিনতে আজহার লক্ষ্মীপুরে এসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন বাংলাদেশি তরুণ রিয়াজ উদ্দিনের সঙ্গে। তাদের মধ্যে দেখাদেখির মাধ্যমে ছয় বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রিয়াজ তার ভালোবাসার নারীকে বিয়ে করেছেন দুই লাখ টাকা দেনমোহরে। রিয়াজ বিয়ের পরপরই সবার উপস্থিতিতে আজিরাকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, হিরের আংটি ও সমপরিমাণ স্বর্ণালংকার দিয়ে দেনমোহর পরিশোধ করেন।
শুক্রবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর পৌরসভার (১২নং ওয়ার্ড) আবিরনগর এলাকার বাসায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন রিয়াজ ও আজিরা।
এ সময় এলাকার গণ্যমান্য লোকজনও উপস্থিত ছিলেন। ওই এলাকার কাজী মোহাম্মদ আলী বেলাল এ বিয়ে পড়িয়েছেন। এ সময় বিদেশি বৌকে একনজর দেখতে আশপাশের নারী-পুরুষরা রিয়াজদের বাড়িতে ভিড় জমান।
বর রিয়াজ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আবিরনগর এলাকার সাবেক সহকারী সাব-রেজিস্ট্রার জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি ১৯৯২ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।
কনে আজিরা মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের ওলিয়া ফেছকুয়াতান ১৫ এ জালাননসি/৬ তামান ইস্তেফাক ইনজাহ, ৫৩/১ কুয়ালালামপুর এলাকার আজহার বিন হোসাইন ও নুর আসিকিন বিন আরেফিন দম্পতির মেয়ে। তিনি ১৯৯৩ সালের ৪ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন।
রিয়াজের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৯ বছর আগে রিয়াজ জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়ায় যান। সেখানে কর্মকালীন সময়ে ছয় বছর আগে আজিরার সঙ্গে তার দেখা হয়। ওই সময় এ মালেশিয়ান যুবতী একটি ফ্যাশন ডিজাইনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতেন। তার পাশেই ছিল রিয়াজের দোকান। সে দোকানে আজিরা ও তার বান্ধবীরা আসতেন। তারা রিয়াজকে সুদর্শন বলে প্রশংসা করতেন। তারা এ বাংলাদেশি তরুণকে ইরানি অথবা সৌদি নাগরিক ভাবতেন। যখন রিয়াজ বলতেন যে তিনি বাংলাদেশি, তখন তারা তা বিশ্বাস করতে চাইতেন না। এভাবে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। কিন্তু আজিরা লাজুক প্রকৃতির হওয়ায় তখনও রিয়াজের সঙ্গে খুব একটা কথা বলতেন না। কিন্তু তার এক বান্ধবীর বিপদের সময় রিয়াজ তাকে খাবার ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করেন। তখন এ বাংলাদেশী যুবকের মহানুভবতা দেখে আজিরা তাকে ভালোবাসতে শুরু করেন। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
প্রথমে আজিরা তার মাকে রিয়াজের বিষয়ে বলে। এরপর তার মাও সুদর্শন রিয়াজকে মেয়ের জামাই হিসেবে মেনে নেন। প্রথমদিকে এ মালেশিয়ান তরুণীর বাবা তাদের প্রেমের সম্পর্কে মেনে নিতে না চাইলেও পরে তা মেনে নেন। এখন শ্বশুর আজহারের সঙ্গে রিয়াজের সম্পর্ক খুবই ভালো।
কনে নুর আজিরা বিনতে আজহার বলেন, বাংলাদেশের মানুষরা খুবই চমৎকার স্বভাবের এবং তারা অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি রিয়াজকে অনেক বেশি ভালোবাসি। কারণ সে খুব ভদ্র স্বভাবের এবং অনেক স্মার্ট। শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে তাদের মেয়ের মতো গ্রহণ করেছেন।
আজিরার সম্পর্কের রিয়াজ বলেন, আজিরার কোনো ছেলেবন্ধু নেই, এজন্যই আমি তাকে বেশি ভালোবাসি। আর মালয়েশিয়াতে আমি অনেক ধরনের মেয়ে দেখেছি, কিন্তু আজিরার মতো কাউকে পাইনি। ওই দেশের মেয়েদের মধ্যে টাকা-পয়সার লোভ থাকে। কিন্তু আজিরার মধ্যে তেমন কোনো কিছুই দেখিনি। এছাড়া আজিরা খুব ভালো মনের মেয়ে।
রিয়াজের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, রিয়াজ আমার ছোট ছেলে। ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করতে চেয়েছি। কিছু জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এ বিয়েতে আমরা পুরো পরিবারই আনন্দিত।
রিয়াজের ভগ্নিপতি ফয়সাল মাহমুদ বলেন, আমরা বিদেশি ভাবি পেয়েছি, এ কারণে আমরা খুবই আনন্দিত। পরিবারের সবাই আজিরাকে সাদরে গ্রহণ করেছেন।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭