ঝিনাইদহ সংবাদদাতাঃ পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে ঝিনাইদহ জেলার সর্বত্র ইটভাটা গুলোতে জ্বলছে আগুন। পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করলেও ঝিনাইদহ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাছির রহমানের ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে ঝিনাইদহ জেলার ৬টি উপজেলায় সর্বমোট ১২৬ টি ইটভাটা রয়েছে। ইটভাটা গুলোর মধ্যে মাত্র ১২ থেকে ১৪ টি ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন রয়েছে। তবে কোন কোন ভাষার পরিবেশ অধিদপ্তরের মত রয়েছে এই প্রসঙ্গে ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাছির রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি এর তালিকা দিতে যথেষ্ট তালবাহানা করেন। পূর্বে ঝিনাইদহ জেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন কার্যালয় ছিল না বিগত ১ বছর যাবত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উত্তর পাশে ঝিনাইদহ চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের পাশে একটি বিল্ডিং য়ে এই কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। ঝিনাইদহে যখন জেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয় ছিল না তখন মাঝে মধ্যে যশোর থেকে ঝিনাইদহে ইটভাটা গুলোর উপর অভিযান চলতো। তবে ঝিনাইদহে পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয় স্থাপিত হওয়ার পর ঝিনাইদহ জেলার সচেতন নাগরিক বৃন্দ আশা প্রকাশ করেন যে এখন থেকে পরিবেশ অধিদপ্তর ঝিনাইদহে পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা পালন করবেন। দৃশ্যতো তা গুড়ে বালি।ঝিনাইদহে অবৈধ ইটভাটা গুলোতে অবাধে জ্বলছে বিভিন্ন বৃক্ষের কাঠ। বিশেষ করে এক সময়ের ঝিনাইদহের ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ। তাছাড়া অন্য অন্য গাছপালার কাঠ। যার ফলে অবাধে ধ্বংস হচ্ছে সবুজ বৃক্ষ। ইতিমধ্যে ঝিনাইদহের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য স্থানের অশ্ব বৃক্ষ জেলা প্রশাসন পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই কর্তন করেছে। জেলার অনেক জায়গায় গড়ে উঠেছে অবৈধ পরিবেশ দূষণকারী বিষাক্ত পলিথিন কারখানা। এমনকি মানুষের জন্য এবং জৈব বৈচিত্র্যে ধ্বংসের জন্য প্রচন্ড ক্ষতিকর সীসা উৎপাদনের অবৈধ কারখানা ঝিনাইদহের কয়েকটা জায়গায় গড়ে উঠলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের এই প্রসঙ্গে তেমন কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সাংবাদিকদের একটু লেখালেখির কারণে গত ৩০শে জানুয়ারি ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের অধীনে নামমাত্র একটি অভিযান পরিচালনা করেন। যে অভিযানে খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগমের নেতৃত্বে ঝিনাইদহ জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে শৈলকুপা ও হরিণাকুন্ডুর মাত্র ৭ টি ইটভাটাতে অভিযান করে শৈলকুপা ও হরিণাকুন্ডুর দুইটি ইটভাটা মেশিন দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। সেইসাথে এই শাস্তি ইটভাটাতে ১৯ লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়। এই অভিযান প্রসঙ্গে ঝিনাইদহ জেলার দৈনিক সত্যপাঠ ও রূপালী বাংলাদেশের প্রতিনিধি জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাছির রহমানের কাছে জানতে চাইলে সে বলে যে আমাদের এই অভিযান চলছে এবং নিয়মিত অব্যাহত থাকবে। কিন্তু অজানা রহস্য জনক কারণে এই অভিযান আর অব্যাহত থাকতে ঝিনাইদহ বাসি দেখেনি।ঝিনাইদহ বাসির এই পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান অভিযান খেলা নিয়ে অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তারমধ্যে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে যে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রতিটা ইটভাটা মালিক ৪.৫ লক্ষ টাকা জমা দিয়ে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। যাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন নেই পরিবেশ অধিদপ্তরকে তাদের মোটা অংকের বাহানা মেটাতে হয়। যে সমস্ত ইটভাটা গুলো এই বাহানা মেটাতে ব্যর্থ হয় মূলত তাদের ভাটাগুলোতেই এই অভিযানগুলো পরিচালনা করা হয়ে থাকে। তাছাড়া ঝিনাইদহে এই অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করার জন্য গড়ে উঠেছে শক্তিশালী মালিক সমিতি নামক এক সেন্টিগ্রেড। যারা পরিবেশ অধিদপ্তরকে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে এই অবৈধ ইনভাটার গুলো পরিচালনা করে আসছে। আরো জানা গেছে যে ইটভাটা গুলো এই মালিক সমিতির নেতাদের বাহানা পূরণ করতে পারেনা তাদের এই অভিযানের শিকার হতে হয়।ঝিনাইদহের একাধিক ব্যক্তি সচেতন মহল এ বিষয়ে মতামত প্রকাশ করে বলেন যে এই ধরনের অভিযান পরিচালনা করে বরঞ্চ জনসাধারণের পকেট কাটার আরো সুব্যবস্থা করা হচ্ছে। কারণ অভিযান পরিচালনা করে ইটভাটা মালিকদের জরিমানা করলে ইটভাটা মালিকেরা সেই জরিমানার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইটের দাম বাড়িয়ে দেয়। যার প্রত্যক্ষ ফলাফল জনসাধারণের উপরই পড়ে।এই প্রসঙ্গে ঝিনাইদহ জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাছির রহমানের নিকট গত শনিবার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানতে যাওয়া হয় যে কি কারনে আপনারা ইটভাটা গুলোতে অবাধে কাঠ জ্বললেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না এর কারণ কি? জনসাধারণ মনে করছে আপনারা এখান থেকে মোটা অংকের চাঁদা গ্রহণ করার ফলে এই অভিযান স্থগিত করেছেন? যারা যারা আপনাদের কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণ করতে পারেনি তাদের ইটভাটা গুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছেন এবং অভিযান পরিচালনা করেছেন। প্রতিউত্তরে তিনি বলেন আপনি এইভাবে বলতে পারেন না। আপনারা নিউজ করেন না কেন? বছরে মাঝে মাঝে দুই একবার আপনারা এই ব্যাপারে দুই একজন একটু কথা বলে থেমে যান। কেন অভিযান পরিচালনা করতে পারছি না এই প্রসঙ্গে আপনি জেলা প্রশাসককে জিজ্ঞাসা করেন। আমার উপর মহল এখানকার ঘটনা সবকিছু অবগত রয়েছে। তবে তাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয় জেলা প্রশাসক কি বাধা দিচ্ছে? তখন তিনি তার উত্তর না দিয়ে বিষয়টা এড়িয়ে যান। এবং বলেন যান আপনারা নিউজ করেন। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তর কোটচাঁদপুরে সীসা কারখানা বন্ধ করেছি ।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭