সাহাব উদ্দীন (রাফেল) নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ঘড়ির কাটা যখন রাত ১২-১ মি: শুরু হবে ইংরেজি নববর্ষ ২০২৪ এর যাত্রা। আর সেই শুভক্ষণে দেশের আকাশে আকাশে উড়বে হাজার হাজার ফানুস। আতশবাজির আলোতে ঝলমলে হয়ে পড়বে চারিদিক। ফানুস এবং আতশবাজির মাধ্যমে পৃথিবীর মন্দকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সারাবিশ্ব সহ রাজধানীবাসী।
নতুন বছর বরণ ও পুরোনোকে বিদায় জানাতে আজ রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দেখা যাবে আতশবাজির উৎসব। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হতে হতে তা বাড়তে থাকে। ছাদে ছাদে চলে থার্টি ফার্স্ট নাইট ও নববর্ষ বরণের প্রস্তুতি। ঠিক রাত ১২টায় রাতের ঢাকা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে আতশবাজি আর ফানুসে।
সারাবিশ্বে মানবসভ্যতা এক কঠিন সময় পাড়ি দিয়ে চলেছে। বৈশ্বিক ক্রান্তিকাল। কখনো মহামারি করোনা। লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু। করোনার ধাক্কা শেষ হতে না হতেই যুদ্ধের ধাক্কা। রাশিয়া-ইউক্রেন আঞ্চলিক যুদ্ধ। কিন্তু বৈশ্বিক প্রভাব সারা দুনিয়ায়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কুপ্রভাবে সমগ্র বিশ্ব টালমাটাল। দেশে দেশে মূল্যস্ফীতি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি। জনজীবনে নাভিশ্বাস। মানুষের স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ ভাবনা বোমার আঘাতে, বারুদের গন্ধে সবকিছু ফিকে হয়ে যাচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধ শুরু হলেও আজও তার অবসানের কোনো লক্ষণ নেই। কবে ইতি ঘটবে, তাও কারো জানা নেই। এর মধ্যেই জীবন চলছে জীবনের মতো।
২০২৪-এর জানুয়ারির শুরুতেই দাদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচন ঘিরেই এই উত্তেজনা। বাংলাদেশের মানুষ জানে না, তারা ২০২২-এর মতো ২০২৩-কে বিদায় জানাতে পারবে কি না। আমরা ক্রমাগতভাবে খারাপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
একটি জাতির সংস্কৃতি সেই জাতির নিজস্ব ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিশ্বাস, আচার-অনুষ্ঠান, ধ্যান-ধারণা ইত্যাদি সামগ্রিক পরিচয় স্পষ্টভাবে ধরে রেখে এবং তা বিশ্ব দরবারে সেই জাতির আত্মপরিচয়কে বুলন্দ করে দেয়। মূলত সংস্কৃতি হচ্ছে একটি জাতির আয়না। সংস্কৃতির বহুবিধ উপাদানের মধ্যে নববর্ষেও অন্যতম। আমরা যাকে ইংরেজি সন বা খ্রিষ্টাব্দ বলি, আসলে এটা হচ্ছে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। বাংলা ভাষায় অব্দ শব্দের চেয়ে সন ও সাল দু’টি বেশি ও সাল এই শব্দ দু’টি আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যজাত, আমাদের তমদ্দুনীয় উৎস সঞ্জাত।
পুরনো বছরের গ্লানি ভুলে নতুনকে বরণ করার উৎসবে সারাবিশ্বের একাত্মতা বিশ্ববাসীকে একটু হলেও এক সুতায় গেঁথে রাখে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুনকে নিয়ে এগিয়ে চলার আনন্দময় ও উন্নত জীবনের গল্পে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। নতুন বছরের কাছে প্রত্যাশা ভালো থাকার, সুন্দর থাকার। দেশটা হোক অস্থিতিশীলতা, সহিংসতা, নৃশংসতা ও জঙ্গিবাদমুক্ত। সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ, শিক্ষাঙ্গনে সুস্থ পরিবেশে বেঁচে থাকুক স্বপ্নরা।