নিজস্ব প্রতিবেদকঃ তফসিল ঘোষণার মধ্যদিয়ে বেজে উঠেছে নির্বাচনী ঘণ্টা। জোরেশোরে নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তার মিত্ররাও নির্বাচনী ডামাঢোলে গা ভাসিয়েছে। অপরদিকে সরকার পতনের একদফা দাবিতে রাজপথে আন্দোলনে বিএনপি, জামায়াত, ডান-বামসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না তারা। ওদিকে বিএনপি নেতাদের নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হচ্ছে নানা টোপ। টার্গেট করা হচ্ছে বিএনপি’র নিষ্ক্রিয় সাবেক এমপি, দলছুট ও বহিষ্কৃত নেতাদের। এ ছাড়া নবম ও দশম সংসদের বিএনপি’র সাবেক এমপিদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। এমনকি কারাগারে থাকা নেতাদেরও নির্বাচনে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। শুধু বিএনপি নয়, তাদের সঙ্গে আন্দোলনে থাকা সমমনা শরিক দলগুলোর নেতাদেরও এমপি-মন্ত্রিত্বসহ নানা অফার দেয়া হচ্ছে।বিএনপি ছেড়ে নতুন দল গড়ছেন। এ ধরনের গুঞ্জন চাউর হওয়ার পর জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে সেই গুঞ্জনে পানি ঢেলে দেন মেজর হাফিজ। তিনি বলেন, বিএনপিতে আছেন, বিএনপিতেই থাকবেন। বিএনপি থেকেই অবসর নেবেন।
এদিকে গত ২৮শে অক্টোবর মহাসমাবেশে সংঘর্ষের পর বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের গণগ্রেপ্তার শুরু হয়। একাধিক শীর্ষ নেতাকে নজরবন্দি করে নির্বাচনে যাওয়ার চাপ দেয়ার গুঞ্জন ওঠে। সরকারের তরফ থেকে নানা প্রস্তাব দেয়ার খবর রটে। ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন মন্ত্রীদের বক্তব্যেও বিষয়টি উঠে আসে। তবে মাঠে এমন আলামত দেখা যায়নি। প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে পাঠানো হয়।
সূত্রমতে, সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় এখন অষ্টম ও নবম সংসদের বিএনপি’র সাবেক এমপিদের নির্বাচনে অংশ নিতে নানা প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে। জেলে থাকা এমপিদের দেয়া হচ্ছে টোপ। মাগুরা-২ আসনের সাবেক এমপি সালিমুল হক কামাল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজার পর কারাগারে আছেন। তার ঘনিষ্ঠ এক স্বজন জানিয়েছেন, কারাগারে থাকা সালিমুল হক কামালকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তাকে বলা হয়েছে, নির্বাচনে অংশ নিলে জামিনে মুক্তি দিয়ে এমপি বানানো হবে। তবে তিনি সেই প্রস্তাবে সাড়া দেননি।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের সাবেক এমপি নাজিমউদ্দীন বলেন, আমার কাছে এই ধরনের প্রস্তাব আসে নাই। বিএনপি’র টিকিটে দুইবার এমপি হয়েছি। বেইমান হয়ে মরতে পারবো না। তবে বিএনপি নির্বাচনে গেলে অংশ নেবেন বলে জানান তিনি।
মাগুরা-৪ আসনের চারবারের সাবেক এমপি শহীদুল ইসলাম বেল্টু বলেন, এমপি-মন্ত্রী কেন প্রধানমন্ত্রী বানানোর প্রস্তাব দিলেও আমি যাবো না। তাছাড়া আমার কাছে কোনো প্রস্তাব নিয়ে কেউ আসেনি।
খুলনা মহানগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, যারা লোভী ও দুর্বল চিত্তের তাদের নানা প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে। আমার কাছে কেউ যোগাযোগ করেনি। তবে সরকারের এই তৎপরতা সফল হবে না। তাদের পাতা ফাঁদে কেউ পা দেবে না।
এদিকে সরকারের প্রলোভনের টোপ গিলেছেন বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সাবেক দুই সদস্য এডভোকেট খন্দকার আহসান হাবিব ও ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম। তারা গত বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেছেন- তাদের ঘোষিত স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চ নামের সংগঠনটির সঙ্গে বিএনপি’র ১২৫ জন নেতা আছেন।