জেলা প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত সহস্রাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। গতকাল সদর থানায় পুলিশ এসল্ট ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দুটি করা হয়। মামলায় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জিকে গউছকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এসল্ট মামলার বাদী এসআই খোরশেদ আলম ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় এসআই ওয়াহেদ গাজী। এ পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার বিকালে হবিগঞ্জে বিএনপি’র পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও বিএনপি’র মধ্যে সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ওসিসহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ওইদিন শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এসময় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে আত্মরক্ষা করেন। তবে বিএনপি’র দাবি তাদের অন্তত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে পরের দিন রোববার বিকালে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।সংঘর্ষের সময় শহরের শায়েস্তানগর ও সার্কিট হাউজ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিকাল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৩ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সাবেক মেয়র জিকে গউছ জানান, আমাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। কিন্তু যতই মামলা, হামলা ও হয়রানি করা হোক আমার প্রাণ থাকতে এক পাও আন্দোলন থেকে সরবো না। আওয়ামী লীগ অন্য কোনো দলকে সহ্য করতে পারে না। এ জন্য তারা বাকশাল গঠন করে সাধারণ মানুষের কণ্ঠ রোধ করতে চেয়েছিল। বর্তমান সরকারও একই ধারাবাহিকতায় বিরোধী দলের কণ্ঠ রোধ করে এককভাবে এ দেশকে লুটেপুটে খেতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, রোববার বিকালে বিনা উস্কানিতে পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, সাহস থাকে তো পুলিশ ছাড়া তারা হামলা করতে আসতো তাহলে দেখতো জিয়ার সৈনিকরা তাদের কী শিক্ষা দেয়। গউছ বলেন, সরকার বুঝতে পেরেছে জনগণ সরকার হটানোর আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে। তাই তারা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে মরিয়া হয়ে আমাদের আন্দোলন থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা জানে না খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার সৈনিকরা জীবন দিয়ে হলেও এ জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাবে। রাতের ভোটে ক্ষমতায় আসা এ অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে না সরিয়ে আন্দোলন থেকে ফিরবে না। সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান জানান, আজ দুটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা পুলিশের ওপর হামলা করে আহত করেছে তাদেরকে অচিরেই গ্রেপ্তার করা হবে।