বেড়া,(পাবনা)প্রতিনিধিঃ ইলিশের ভরা মৌসুমে যমুনা-পদ্মার কাজিরহাট, আরিচা, ঢালারচর কাশেম মোর পয়েন্টে কিন্তু নদীতে দেখা মিলছে না কাঙ্ক্ষিত রূপালি ঝিলিকের। সাধারণত বর্ষাকালকে ইলিশের ভরা মৌসুম বলা হয়। এই সময়ে জেলেদের জালে সবচেয়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়ে এবং বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। স্বাদে ও গুণে অতুলনীয় এ ইলিশ। পহেলা বৈশাখ কিংবা অতিথি আপ্যায়ন – বাঙালির যে কোনো উৎসব-আতিথেয়তার অন্যতম অনুষঙ্গ এটি। লোভনীয় সুস্বাদু রূপালি ইলিশ যেন এখন শুধু অতীতের কোনো গল্পগাঁথার সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তাকে অনুভব করা যায়, ধরাছোঁয়া যায় না।স্বাদের সুনাম ধরে রেখে বাংলার জাতীয় মাছ ইলিশ বিশ্বজুড়ে এখনো ছড়াচ্ছে খ্যাতি। বিশ্বে উৎপাদিত ইলিশের ৮০ শতাংশের বেশি মেলে বাংলাদেশের নদ-নদীতে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ইলিশ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বর্ষা মৌসুম এলেই বছর বছর ডিম ছাড়তে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ চলে আসে নদীর মোহনায়। এ সুযোগে জেলেরা ইলিশ ধরতে নামেন নদী থেকে সমুদ্রে। ভরা মৌসুমে ইলিশে ভরে যায় জেলের নৌকা। জেলের মুখে দোল খায় হাসি। তাই বাজারেও সস্তায় মেলে ইলিশ। তবে এবারের ছবি একেবারেই আলাদা। ভরা মৌসুমেও ইলিশের দামে আগুন। এবার যেন ‘মাছের রাজা’ বদলে ‘দামের রাজা’ হয়ে উঠেছে ইলিশ।পদ্মার ইলিশ শিকারি চরদূগাপুর গ্রামের মোঃ শাহিন জানান, পদ্মায় মাছ ধরেই চলে তাদের জীবন ও জীবিকা । বিগত বছরগুলোতে প্রচুর ইলিশ পেলেও ২ বছর ধরে নদীতে দেখা মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ। আরিচা, কাজিরহাট, নাজিরগঞ্জ, ঢালারচর, কাশেম মোর অঞ্চলের পদ্মা-যমুনার পয়েন্টে দিন-রাত জাল ফেলেও পাচ্ছি না ইলিশ এই অবস্থায় আমাদের সংসার চালানো বিপদ হয়ে পরেছে।
বেড়া উপজেলা মৎস্য আড়ৎদার আলমগীর কবির, মহাদেব জানান, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর আড়ৎতে ইলিশের সরবরাহ খুব কম। আষাঢ় ও শ্রাবণ দুই মাস পুরো মৌসুম। প্রতি বছর এ সময়ে ইলিশ বেচাকেনায় দৌড়ঝাঁপ থাকে। অথচ এবছরে আড়ৎ গুলোতে তার বিপরীত চিত্র।বেড়া উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ নাসির উদ্দিন জানান,বর্তমানে নদীতে ডুবো চরের কারণে পানির গভীরতা কম থাকায় সাগর থেকে নদীতে ইলিশ আসতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণেই নদীতে ইলিশের সংকট রয়েছে। তবে নদীতে পানি বাড়লে ও ভারী বৃষ্টি হলে জেলেরা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাবে বলে আমরা আশাবাদী।