বেড়া(পাবনা)প্রতিনিধিঃ বর্ষা এসেছে নতুন পানির সঙ্গে খাল-বিল, নদ-নদীতে দেখা মিলবে দেশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। আর এসব মাছ ধরতে জেলেরা ব্যবহার করছে বাঁশের তৈরি চাঁই, ঘূর্ণি বা দুয়ারী। চিংড়িসহ ছোট মাছ ধরতে এ চাইয়ের চাহিদা প্রচুর। এ শিল্পকে কুটির শিল্পের সঙ্গে তুলনা করেন হস্তশিল্প কারিগররা। তবে অনাবৃষ্টির কারনে আষাঢ় মাস শুরু হলে ও পানির দেখা নেই কোখায় ও। ফলে চাইয়ের চাহিদা কম থাকায় মুখে হাঁসি নেই চাঁই শিল্পের কারিগরদের।
বেড়া উপজেলার, বেড়া বাজার পাটপট্রিটে জমে উঠেছে পাইকারি এসব মাছ ধরার ফাঁদের হাট। সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার এ হাটে মাছ ধরার ফাঁদ, দুয়ারী (চাঁই) পাইকারি দরে বিক্রি হয়, উপজেলার ও আশপাশের উপজেলা ও বিভিন্ন গ্রাম থেকে বাশেঁ বেধে বাজারে বিক্রয় করতে নিয়ে আসে চাঁই কারিগর‘রা। বেড়া উপজেলার নয়টি ইউনিয়নসহ সিরাজগঞ্জ জেলার, শাহজাদপুর, চৌহালি, এনায়েতপুরসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ যন্ত্র কিনতে আসেন পাইকারি ব্যবসায়ী ও জেলেরা।
সাথিঁয়া উপজেলার নাগ-ডেমড়া, সেলুন্দাসহ, ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বহু পরিবার চাই, ঘূর্ণি ও দুয়ারী তৈরির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বছরে ফাল্গুন মাস থেকে শ্রাবন মাস পর্যন্ত ৬ মাস তারা এসব মাছ ধারার ফাঁদ তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন। বিভিন্ন জাতের বাঁশ দিয়ে এ ফাঁদ তৈরি করেন তারা। বাজারে মান ভেদে (৬) টি চাই ২ হাজার ৮ শত টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকেন। এসব ফাঁদ তৈরির প্রতিটি বাঁশ কেনা হয় ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে। বাঁশ কেনা থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ চাঁই করতে যে কষ্ট আর খরচ হয় সে তুলনায় লাভ বেশি হয় না দাবি করেন চাঁই শিল্পীরা।
সাথিঁয়া সেলুন্দা ইউনিয়নের চাঁই শিল্পী আঃ রশিদ মিয়া জানান, এ শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। চায়না-দুয়ার ও খাল-বিল ও নদীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় মাছ শিকারির সংখ্যাও কমেছে, যার কারণে চাঁইয়ের চাহিদাও কমছে। বর্তমান সব কিছুর দাম বেশি সে তুলনায় তারা চাঁইয়ের ভালো দাম পাচ্ছেন না। সরকার এ শিল্প বাঁচাতে স্বল্প সুদে ঋণ দিলে তাদের কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে পারতেন।
সাথিঁয়ার নাগ-ডেমড়া ইউনিয়নের আজমত আলী সরকার জানান, এসব চাঁই আমাদের কাছ থেকে পাইকারা কিনে নিয়ে দূর-দূরান্তের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যায়। এ বছর চাঁইয়ের বাজার দর অন্য বছরের চেয়ে কম হওয়ায় লাভের তেমন কোন সম্বভনা নেই বল্লেই চলে।