ঢাকাসোমবার , ৮ মে ২০২৩
আজকের সর্বশেষ খবর

সম্পত্তি দখলে নিতে প্রতিপক্ষের হামলায় ৩০ বছর ধরে পঙ্গু জীবন, সংবাদ সম্মেলন


মে ৮, ২০২৩ ৮:৩৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাবু হাওলাদার টঙ্গীবাড়ী (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: সবেমাত্র মেট্রিক পাশ করে এইচএসসিতে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিতেছিলো মেধাবী ছাত্র নারায়ণ কান্ত গাগুলী । কিন্তু আর এইচএসসি ভর্তি হতে পারেননি তিনি। পৈত্রিক সম্পত্তি দখলে নিতে বাবার উপর হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে সারা-জীবনের পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে তাকে। পঙ্গু হয়ে যাওয়ায় ৪৫ বছর বয়সেও করতে হচ্ছে তাকে একা জীবন যাপন দাম্পত্য জীবনে সঙ্গী হয়নি কেউ। ৩০ বছর যাবৎ অন্যের কাঁদে চরে জীবন যাপন করছেন তিনি। মুষ্টিমেয় সম্পত্তি ৩০বছর আগে তাকে ও তার পিতাকে মারধর করে দখলে নিয়েছে স্থানীয়দের ভূমিদশ্যূ পরিবার। নিজের সম্পত্তি বলতে শেষ সম্বল বসত বাড়িটুকুও দখলে নিতে মরিয়া ওই একই ভূমিদশ্যূরা। শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে প্রতিকার না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতিবন্ধী নারায়ণ কান্ত গাগুলী। আজ সোমবার (৮ এপ্রিল ) দুপুর ১টার দিকে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের শফিউদ্দিন মিলনায়তনে তার বড় ভাই লক্ষিকান্ত গাগুলী ও ভাবি অর্চনা রানি গাগুলীকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। নারায়ন কান্ত গাগুলী মুন্সীগঞ্জের   টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামের মৃত নরহরি গাগুলীর ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনে বলেন, আমার বাবা নরহরি গাগুলীর কাছে ১৯৮০ সালে আমাদের বাড়ির পাশের দশত্তর গ্রামের আঃ রহমান মাঝি ও মৃত করিম মাঝি তাদের থাকার জমি না থাকায় তারা আমাদের বাড়িতে থাকতে চাইলে তাদের ঘর তুলে থাকতে দেয়। ১০ বছর তারা আমাদের বাড়িতে থাকার পর ১৯৯০ সালের মার্চ মাসে একদিন রাতে করিম মাঝি আমার বাবাকে ঘর থেকে ঢেকে নিয়া যায়। পরে বাবা ৩ দিন নিখোঁজ ছিল। নিখোঁজের বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের জানাইলে ৩ দিন পর আমার বাবা পাগলের মতো আমাদের বাড়িতে ফিরে আসে। তারপর হতে সে সম্পূর্ণ অসুস্থ এবং মানুষিক রোগী হয়ে পরে। সে সময় আমিসহ আমার পরিবারের অন্য ভাই বোনের ছোট থাকায় রহমান মাঝি ও করিম মাঝি আমাদের পাচঁগাঁও ও চিত্রকড়া মৌজার সাড়ে ৫ একর সম্পত্তি এক এক করে দখলে নিতে থাকে। সম্পত্তি দখলে নিতে গিয়ে ১৯৯৩ সালের নভেম্বর মাসে তারা আমার বাবাকে বাড়ির উঠোনে নিয়ে করিম মাঝি, তার ভাতিজা রুহুল মাঝি ও আমির মাঝি আম গাছের চলা দিয়ে বেধক পিটিয়ে জখম করতে থাকলে আমি আমার বাবাকে বাঁচানোর জন্য বাবার শরীরের উপরে গিয়ে পরি। এ সময় তারা আমাকে আম গাছের চলা দিয়ে পিটিয়ে আমার মেরুদন্ডের হাড় ভেঙ্গে ফেলে। তাদের আঘাতে আমি পঙ্গু হয়ে যাই। ৩০ বছর যাবৎ আমি পঙ্গু অবস্থায় জীবন যাপন করতেছি। বর্তমানে আমার বাবা ও চাচাদের সাড়ে ৫ একর সম্পত্তি করিম মাঝির ছেলেরা এবং রহমান মাঝি জোড় করে দখল করে রাখছে। আমাদের বসতবাড়ির অধিকাংশ দখল করে নিয়েছে বাকি অংশটুকু দখল করার পাঁয়তারা করছে। পরে গত ৪ মে করিম মাঝির ছেলে বুলেট মাঝি, রমজান মাঝি, রজ্জব মাঝি, রহমান মাঝির ছেলে রুহল মাঝি, আমির মাঝি তাদের সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের গাছে আম পারতে যায়। আমার ভাই লক্ষিকান্ত গাঙ্গুলী আম পারতে নিষেধ করলে তারা আমার ভাই লক্ষিকান্ত গাঙ্গুলি ও তার স্ত্রী অর্চনা রানি গাঙ্গুলীর উপর হামলা করে মারধর করে এবং ভাবিকে ধর্ষণ করার হুমকি দেয় । পরে আমার ভাইয়ের স্ত্রী অর্চনা রানি বাদী হয়ে এ ঘটনায় টঙ্গিবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করলে তারা কোন মামলা নেয়নি। এ ব্যাপারে অর্চনা রানি গাঙ্গুলী বলেন, আমাদের কোন ছেলে সন্তান নাই। ৩টি মেয়ে আছে। বুলেট মাঝি গংরা আমাদের ও আমাদের মেয়েদের প্রতিনিয়ত অশ্লিল গালিগালাজ হুমকি ধামকি দেয়। ওদের ভয়ে আমাদের মেয়েদের হোস্টেলে রেখে লেখাপড়া করাই। গত ৪ মে ওরা আমাকে মেরে আমার কাপড় ছিড়ে ফেলছে। অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে আমাকে রেপ করার হুমকি দেয়। আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি কিন্তু পুলিশ আমাদের মামলা নেয়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোবারক হোসেন বুলেট মাঝি বলেন, আমরা কাউকে মারিনি। নারায়ণ আগে থেকে অসুস্থ। আম পাড়া নিয়ে তাদের সাথে আমাদের একটু দ্বন্দ্ব হয়েছে। আমরা তাদের সাথে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে বসবাস করছি। আমরা তার বাবার কাছ হতে জমি কিনছি বৈধ কাগজ আছে।
এ ব্যাপরে টঙ্গিবাড়ী থানা ওসি রাজিব খাঁন বলেন, আম পড়ার ঘটনায় ২ পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। যদি তাদের কেউ রেপ করার হুমকি দেয় তাহলে থানায় অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ  বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।