স্টাফ রিপোর্টারঃ পাবনার বেড়া উপজেলার কুশিয়ারা গ্রামের কথিত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে তার ভাই-বোনের সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির অংশীদার হিসাবে তার আপন বোন লিলি বেগম ও ভাই আজাদ মিয়াকে না দিয়ে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে মেরে তেড়ে দিয়েছেন তিনি।
লিলি বেগম অভিযোগ তুলে বলেন,১৯৭১ সালে তার ভাই রশিদ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সুযোগ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে ক্ষমতা বিস্তারিত করে । যার প্রভাবে তার নিজের বাবার সম্পত্তি থেকে জাল দলিল করে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সে এখন পাবনা সদরে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ করে জীবিকানির্বাহ করে।
অপরদিকে কথিত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদের মেঝো ভাই আজাদ মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তার ভাই হাড়ি পাতিলের ব্যবসা করতো বলে জানতেন। তবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার কথা বা দেখার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দাবি করে মুক্তিযোদ্ধা। এর আগে তার বাবার সম্পত্তির দাবি করায় ছেলেদের সাথে নিয়ে মারধর করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধার সুযোগ সুবিধা ভোগের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সুযোগ নিয়ে চার ছেলের মধ্যে দুইজন অল্প শিক্ষিত ছেলেকে দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা কৌটায় চাকরি।
সরেজমিনে এই কথিত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি পাকা ঘরও পেয়েছেন তিনি। সেই ঘরেই রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণমূলক লগো। যদিও অনুসন্ধানের তথ্য মতে জানা যায়, বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক এই পাকা ঘরটি উপহার দেওয়া হলে নির্মাণের সময় জানা যায় সে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা। তাই নির্মাণের অর্ধেক কাজ বাকী থাকে। এরপর নিজ অর্থায়নে সেটি পরবর্তী নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করে দাবি করেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে তার এই ঘরটি উপহার দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুর আলীকে একাধিকবার ফোন করেও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
কিন্তু তথ্য বিশ্লেষণ করলে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে এই কথিত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদের নাম ঠিকানা ও গেজেটের বিস্তারিত লিখে সার্চ করলে তাকে ভুয়া বা বাতিল বলে উল্লেখ্য করা আছে। যদিও তিনি সেখানে ও প্রভাব খাটিয়ে হাইকোর্টে আপিল করেছেন।
এলাকাবাসীর দাবি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের বাতিল করা এই কথিত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমাদে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে পালিয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে যুদ্ধের শেষে তিনি বাংলাদেশে আসেন।
উল্লেখ্য, এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার কুশিয়ারা গ্রামের মৃত জব্বার আলীর ছেলে।
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের গেজেট বাতিল করা এবং আপন ভাই-বোনদের উত্তরাধিকারের সম্পত্তি আত্মসাতের তথ্য চিত্রের মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।