শহীদুল ইসলাম শহীদ , সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ "হোক প্রতিবাদ হোক প্রতিরোধ"
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের সাড়ে এগারো হাজার বই পাচারের ঘটনায় প্রকৃত মুলহোতা একে ধরা ছোঁয়ার অন্তরালে চলে গেল এনিয়ে উপজেলার সর্বমহলে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা ও তীব্র নিন্দা সেই সঙ্গে চরম ক্ষোভ এবং অসন্তোষ। বই পাচারের ঘটনা নিয়ে চলছে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্র বইছে সমালোচনার ঝড়। প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মহলের জনগণ। বই পাচারের ঘটনায় গত ২২ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে
সুন্দরগঞ্জ পৌর শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বরে উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজের আয়োজনে দুই ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করেন। মানববন্ধন চলা কালে বক্তব্য রাখেন সচেতন নাগরিক সমাজের আহবায়ক প্রভাষক মাসুদুর রহমান প্রামানিক, যুগ্ম-আহবায়ক ও উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি সাজেদুল ইসলাম, যুগ্ম-আহবায়ক ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, গোলাম কবির মুকুল, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম আহসান হাবিব মাসুদ, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আতাউর রহমান মাস্টার, পৌর আ’লীগের সভাপতি আহসানুল করিম চাঁদ, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা জাসদের সাবেক সভাপতি মুসলিম আলী মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম, উপজেলা সিপিবির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম পিপুল, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহজাহান মিঞা, সুন্দরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বুলু, তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মুন্সী আমিনুল ইসলাম সাজু, উপজেলা উদিচী সভাপতি এটিএম মাসুদ-উল ইসলাম চঞ্চল, যুবনেতা শহিদুল ইসলাম রানা, সাবেক জেলা ছাত্রনেতা দেবাশীষ চন্দ্র সাহা,উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা রুহুল আমিন, রতন মিয়া, সুমন মিয়া প্রমূখ।
এসময় বক্তারা বলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বই পাচারের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও কয়েকবার বই পাচারের ঘটনা ঘটলেও অজ্ঞাত কারণে অপরাধীরা পার পেয়ে গেছে। এবার সারাদেশে বই নিয়ে সংকট চলছে। বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুরা এখনো সব বই পায়নি এরই মাঝে বইয়ের গোডাউন থেকে সাড়ে ১১ হাজার পিচ বই পাচার করে মোটা অঙ্কের টাকার লোভে পাচার করে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুর পঞ্চিম থানা পুলিশ আটক করেন। এই ঘটনা শুধু একটি নিছক পাচার ঘটনাই নয়। এটি সরকারের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন করেছে বলে দাবী করেন এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর জন্য এটি ঘটানো হয়েছে। এতো গুলো বই পাচার করা মাধ্যমিক অফিসের অফিস সহায়ক মাজেদের একার পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানান। তারা বলেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বই পাচারের দায় এড়াতে পারেন না। তারা আরও বলেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস দূর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে। সঠিক তদন্ত করলে ঘটনার সাথে জড়িত মুলহোতা বেড়িয়ে আসবে। তাই বই পাচারের সাথে জড়িত সকল আসামীদের আইনের আওতায় আনার দাবীতে মানববন্ধন করা হয়। বক্তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি রাতে সুন্দরগঞ্জ থেকে সাড়ে ১১ হাজার সরকারি বই ট্রাকে করে পাচারকালে ড্রাইভার ও হেলপার কে আটক করে বইগুলো উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু পশ্চিম থানা পুলিশ। এঘটনায় পরদিন ১৬ জানুয়ারি সুন্দরগঞ্জ থানায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন মন্ডল বাদী হয়ে তার অফিসের অফিস সহায়ক মাজেদ, ট্রাক ড্রাইভার শ্যামল ও হেলপার রাসেলকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি সুন্দরগঞ্জ থানার এসআই আরিফুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর ডিবি পুলিশের উপর তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। ডিবি পুলিশ আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। বিজ্ঞ আদালত প্রত্যেক আসামির ২ দিন করে রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে আসামীদের জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। সুত্রমতে আসামীরা বই পাচারের সাথে জড়িত তারা নিজেরা ছাড়া কারো নাম স্বীকার করেনি।এদিকে বিনা মুল্যের বই পাচারের মুলহোতা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুঃ মাহমুদ হোসেন মন্ডলকে আখ্যায়িত করে উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক )ব্যাপক ভাবে লেখা ও পোষ্টার ছেয়ে গেছে সারা উপজেলায়। মোঃ সাজেদুল ইসলাম, সহ--সভাপতি উপজেলা আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ নেতা মোঃ শাওন সরকার, রতন মিয়া, মোঃ শফিক, মোঃ আল আমিন, গনেশ শীল ও শহিদুল ইসলাম রানা সহ অসংখ্য তাদের আইডিতে থেকে করে লিখেছেন মাধ্যমিক অফিসার নিজের দায় অফিস সহায়ক মাজেদের ঘাড়ে চাপিয়ে তিনি আরেকটি মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন বই চোর মুঃ মাহমুদ হোসেন মন্ডলকে অবিলম্বে চাকুরী থেকে বরখাস্ত ও গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। মুলহোতা মাধ্যমিক অফিসারকে গ্রেফতার হলে আসল রহস্য উন্মোচন হবে। সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে জামাতির বাচ্চা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে ব্যাপক ও নিরলসভাবে কাজ করছে সেখানে সুবিধাবাদী লেবাজধারী কর্মকর্তারা এরম রাষ্ট্র বিরোধী গুরুতর অপরাধ করে কোন এমন অদৃশ্য ক্ষমতার বলে বেঁচে যাবে। তাদের প্রশ্ন আশ্চর্যজনক বা ভূতুরে কারণে মুল অপরাধী ধরা ছোঁয়ার বাইরে বলে অভিযোগ এলাকাবাসির। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে চায়ের দোকান থেকে শুরু সর্বত্র। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মদদ দাতা পার পেয়ে যাবে এবং বহাল তবিয়তে অফিস করবে এটা তারা মানতে নারাজ। অনেকে বলেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের খুটির জোর কোথায় ?