ভোলার লালমোহনে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ভোরের খবর ডেস্কঃ  ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি)-এর অন্তর্ভুক্ত স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিম-এর আওতায় পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। লালমোহন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জনাব মো. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব অনামিকা নজরুল, বিশেষ অতিথি (শিক্ষক প্রতিনিধি) হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাহবাজপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক (বাংলা) জনাব আকলিমা বেগম। এছাড়াও লালমোহন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মদন মোহন মন্ডল ও লালমোহন উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের ৭৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সংগঠকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনাব মদন মোহন মন্ডল, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার, লালমোহন, ভোলা। তিনি বলেন আমাদের আগামীর প্রজন্মকে সুন্দর জীবন দিতে হলে তাদেরকে বইমুখী করতে হবে। বই পড়ার কোন বিকল্প নাই। একমাত্র বই পারে সকল খারাপ কাজ থেকে দুরে রাখতে। উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র কর্মপরিকল্পনা, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন জনাব মো: জাফর হোসেন, টিম ম্যানেজার, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। তিনি বলেন, উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার অন্যতম উদ্দেশ্য মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তাদের মন এবং বয়স উপযোগী বই পড়ায় আগ্রহী করে তোলা। পাঠাভ্যাসের প্রসার ও সুযোগ বৃদ্ধি করা। কর্মসূচি পরিচালনার জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন, বইপড়া শেষে মূল্যায়নের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি টেকসই ও কার্যকর  করার লক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। বইপড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আজকের এই কর্মশালা।

বিশেষ অতিথি শাহবাজপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক (বাংলা) জনাব আকলিমা বেগম বই পড়ার ব্যপারে গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে বলেন বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠের অভ্যাস কমে গেছে। সে অভ্যাস গড়ে তুলতে রুচিশীল বই পড়া প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন এই কর্মসূচির বই পড়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠের অভ্যাস বৃদ্ধি পাবে। তাই এই কর্মসূচি সফল করতে উপস্থিত শিক্ষকদের প্রতি আহবান জানান।

কর্মশালার প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব অনামিকা নজরুল তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি যে পাঠাভ্যাস বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে এটা খুবই ভালো একটি কাজ। আমরা যদি আমাদের সন্তানদেরকে সঠিক এবং সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই তবে তাদেরকে এ বইগুলো পড়াতে হবে। বর্তমান পৃথিবী হলো প্রতিযোগিতাময়। এখানে নিজের একটা সুন্দর ভবিষ্যত পাইতে হলে নিজেকে তৈরি করতে হবে। আর তৈরি হওয়ার প্রধানতম মাধ্যম হলো বই। তাই সকল প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে আমার বিশেষভাবে অনুরোধ আপনারা শিক্ষার্থীদের বইগুলো পড়ার জন্য উৎসাহ ও উদ্দীপনা দিবেন। তাহলে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হবে এবং আমাদের আগামীর প্রজন্ম আলোকিত হবে।

কর্মশালার সভাপতি জনাব মোঃ রফিকুল ইসলাম পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির বিভিন্ন বিষয়ের উপর দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি সরকারের এ উদ্যোগকে সফলভাবে বাস্তবায়ন করার লক্ষে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে আরো  উদ্যোগী হওয়ার আহবান জানান। আগামীর প্রজন্মকে আলোকিত ও ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বই পড়ার বিকল্প নেই। আগামী দিনগুলোতে এ পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচিসহ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সকল কাজে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে এই বলে কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।