আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গাজিয়ানতেপে সিরিয়া সীমান্তের কাছে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২৪৬১ । এরমধ্যে তুরস্কে মারা গেছেন কমপক্ষে ১৬৫১ জন। আহতের সংখ্যা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে এ সংখ্যা হাজার হাজার। অপরদিকে সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে মারা গেছেন ৮১০ জন এবং আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। আর সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে মারা গেছেন ১২০ জন। এ খবর দিয়েছে টিআরটি ওয়ার্ল্ড। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৯। সোমবার স্থানীয় সময় ভোর সোয়া চারটার দিকে আঘাত হানে। গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে এর গভীরতা ছিল মাত্র ১৮ কিলোমিটার।
ভূম্পিকম্পটি রাজধানী আঙ্কারা এবং তুরস্কের অন্যান্য শহরেও অনুভূত হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট পুরো অঞ্চল জুড়েই কম্পন অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের কারণে সীমান্তের দুই পাশেই শত শত ভবন ভেঙে পড়েছে। নিহতের সংখ্যা দ্রুত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পের পর সহমর্মিতা জানাতে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ফোন করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পাশাপাশি তিনি আশ্বাস দেন, এই বিপর্যয়কর মুহূর্তে যে কোনো ধরণের সহযোগিতার জন্য রাশিয়া প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সঙ্গে সঙ্গেই দুটি আইএল-৭৬ বিমানকে সিরিয়ায় পাঠিয়েছে মস্কো। এগুলো উদ্ধারকার্যে সিরিয়ার বাহিনীকে সাহায্য করবে। এছাড়া সিরিয়ায় শান্তিরক্ষায় নিয়োযিত রুশ সেনারা এরইমধ্যে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে।
ভূমিকম্প আঘাত হানা অঞ্চলে জরুরি উদ্ধারকার্য পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। সোমবার সকালেই তিনি মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন। সিরিয়ার সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা হচ্ছে আলেপ্পো, হামা এবং লাটাকিয়া প্রদেশ। উদ্ধার অভিযান ও মানুষের প্রাণ বাঁচাতে সিভিল ডিফেন্স, দমকল, স্বাস্থ্য, পাবলিক কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং তাদের শাখাগুলোকে নিয়োযিত করেছে সিরিয়া সরকার। দেশের সকল প্রদেশ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যথাসম্ভব পরিবহণ সরবরাহ করতে। সারা দেশ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যারা গৃহহীন হয়েছেন তাদেরকে দ্রুততার সঙ্গে আশ্রয় এবং খাদ্য নিশ্চিত করা হচ্ছে।
তুরস্কে সবথেকে বেশি প্রাণহানী হয়েছে মালাতিয়া প্রদেশে। এছাড়া দিয়ারবাকির এবং ওসমানিয়ে প্রদেশেও বহু হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্তের ওপাড়ে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪২ জন নিহত হয়েছেন। সেখানেও বহু ভবন ধ্বসে পড়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভেঙে পড়া বাড়িগুলোর নিচে এখনও বহু মানুষ আটকা পড়ে আছে। তুরস্কে একটি শপিংমল ধসে পড়েছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেই দীর্ঘ সময় ধরে কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটি আঘাত হানার কয়েক মিনিট পরেই দ্বিতীয় আরেকটি কম্পন অনুভূত হয়। উল্লেখ্য, তুরস্ক পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলগুলোর একটিতে অবস্থিত। এর আগে ১৯৯৯ সালে দেশটির উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭