ঢাকাবুধবার , ৯ নভেম্বর ২০২২
আজকের সর্বশেষ খবর

শিবালয়ে ড্রেজার বাণিজ্যের অভিনব কৌশল আনলোডের অন্তরালে যমুনার বালু লুট


নভেম্বর ৯, ২০২২ ৯:০৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টারঃ  মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের বড়রিয়া এলাকার সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের পাশে যমুনা নদীতে দিনের আলোতে চলছে বলগেট থেকে বালু আনলোড বাণিজ্য। কিন্তু অুিভযোগ রয়েছে, সন্ধ্যে ঘনিয়ে এলেই পাল্টে যাচ্ছে তাদের কার্যক্রম। তখন মাটি ব্যবসায়ীরা আনলোড কার্যক্রম গুটিয়ে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাতের আঁধারে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ড্রেজারের সাহায্যে অনতিদুরের চর কেটে শুরু করেন বালু বাণিজ্য।
জানা যায়, এ ড্রেজার বাণিজ্য ব্যবসার মূল দলপতি ঝড়িয়ারবাগ এলাকার মোঃ হাসান। তার ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে রয়েছেন রুহুল,আলমগীর, বিষ্ণু, আতিকুল, রশিদ প্রমুখ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই ড্রেজার ব্যবসা করতে গিয়ে হাসান অনেকবার মোটা অংকের জরিমানা দিয়েছেন এবং বেশ কয়েকবার তার ড্রেজারের পাইপ প্রশাসনের লোকজন ধ্বংস করে দিয়েছেন। এতে তিনি এখন যেন আরো দুর্দমনীয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও পাশ্ববর্তী ফসলী জমির ক্ষতি সাধন করে তারা দিনের পর দিন ড্রেজার ব্যবসা করে উপার্জন করছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
বড়রিয়া এলাকার জহিরুল ইসলাম জানান, মাটি ব্যবসায়ীদের ড্রেজারের পানিতে এখন পর্যন্ত তাদের প্রায় ৩ বিঘা জমি পানির নীচে ডুবে আছে। আমরা যদি এখন জমি চাষ করতে না পারি বৌ বাচ্চা নিয়ে সংসার চালাবো কিভাবে? ড্রেজার ব্যবসায়ী হাসানকে শত অনুরোধ করেও ড্রেজার বাণিজ্য থেকে তাদের প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে কথা বললে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা আমাদের সাথে রাগারাগি করেন। এ কারণে এখন আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে নিরবে সব অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছি। এ ছাড়াও, এলাকা কয়েকজন সচেতন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ড্রেজার ব্যবসায়ী হাসান গং দাপটে সাধারণ মানুষ অসহায়। কোন লোক ড্রেজার বন্ধের বিষয়ে তাদের অনুরোধ করলে তারা নানারকম ভয়ভীতি দেখান। তাদের চালচলন, আচার ব্যবহার ও কথাবার্তায় মনে হয় তারা যেন ড্রেজার ব্যবসার বৈধ লাইসেন্স পেয়েছেন।
৮ নভেম্বর (মঙ্গলবার) আরুয়া ইউনিয়নের সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের পাশে যমুনা নদীর তীর ঘুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসান গং ড্রেজার দিয়ে বলগেট থেকে বালু আনলোড করছেন। তখন স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, দিনের বেলায় ড্রেজার দিয়ে যে বালু আনলোড করা হয় এটি হচ্ছে তাদের অবৈধ ড্রেজার ব্যবসার বৈধ সাইনবোর্ড। কিন্তু রাতের বেলা তারা তাদের মূল ব্যবসায় ফিরে যান। অর্থাৎ তখন আনলোড বন্ধ করে অনতিদুরের চর থেকে ড্রেজিং এর মাধ্যমে বালু সংগ্রহ করে বিভিন্ন পয়েন্টে অবাধে বিক্রি করেন।
মোন্তাজ উদ্দিন মাষ্টারের ভাগিনা মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, আমি হাসানের সঙ্গে ড্রেজার ব্যবসায় যুক্ত নই। অনেকেই আমার সম্পর্কে আপনার কাছে অনেক কিছু বলতে পারেন কিন্তু তার কোন ভিত্তি নেই। কেউ যদি আপনার কাছে আমার নাম বলে থাকে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট।
ড্রেজার ব্যবসায়ী মোঃ হাসান প্রতিবেদককে জানান, আমার ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে আছেন আলমগীর ভাই, রুহুল ভাই, আতিকুল, বিষ্ণু এবং ঘিওরের রশিদ। রাতের আঁধারে মাটি কাটার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, আমি রাতের আঁধারে কোন চর কাটিং করিনা। আমি বৈধ ব্যবসা করি। প্রশাসন যদি অন্য দশটা লোডআনলোড ব্যবসা চালাতে দেয় সেক্ষেত্রে আমারটাও চালাতে দিতে হবে।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুর রহমান জানান, নদীতে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের কোন সুযোগ হনেই। রাতের বেলায় তারা যদি এহেন কাজ করে থাকেন তবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার মতামত বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com ❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।