লিমা আক্তার (জাককানইবি প্রতিনিধি): ২০ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) ‘ন্যাশনাল ক্যাম্পাস জার্নালিজম ফেস্ট-২০২২’ শুরু হয়েছে। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সোমবার (২১) দুইদিনব্যাপী আয়োজিত ফেস্টের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।
এসময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উদ্বোধনী অধিবেশনের প্রধান অতিথি ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র এ বি এম আনিছুজ্জামান, ত্রিশাল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মতিন সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীরসহ অন্যরা।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এই ফেস্টে অংশ নিতে সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদকদের প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আসেন। ব্যান্ডপার্টির বাজনার তালে শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে দিনের কর্মসূচী শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি প্রেসক্লাব কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাজে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার গুরুত্ব তুলে ধরে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, সাংবাদিকদের বন্ধু না থাকলেও শত্রুর অভাব নাই। কোন নিউজ পক্ষে গেলে সাংবাদিক ভালো বিপক্ষে গেলে খারাপ। এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সাংবাদিকরা আছেন বলে আমরা সমাজে এখনো সচেতন ও ভালোভাবে থাকতে পারছি। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে এখন সবাই অনেক বেশি সচেতন। না হলে যেকোন সময় ভাইরাল হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পেয়ে এ এলাকার মানুষ ধন্য। এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার আন্দোলনের পেছনে ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের অবদান অনন্য। সময়ের সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়টি এগিয়ে যাচ্ছে-এটা দেখে আমরা সবাই খুব খুশি ও গর্ব অনুভব করি।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, সংবাদপত্র আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে। তবে এখন শুধু সংবাদপত্র নয় বরং মিডিয়া হয়ে গেছে। এখানে ইলেকট্রনিক মাধ্যম, ভার্চুয়াল মাধ্যম এমনকি ওটিটি নামে একটি মাধ্যমও যুক্ত হয়ে গেছে। যার মধ্যে দিয়ে এখন সংবাদ বা তথ্যের আদান-প্রদান দেখতে পাই। তাই আজকে যাদের নিয়ে এই সম্মেলন-আয়োজনটি হয়তো ছোট কিন্তু এর ব্যাপ্তি অনেক বেশি। এই ক্যাম্পাসে আজ দূর দূরান্ত থেকে নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা এসেছে।এটা অত্যন্ত আনন্দের । এই আনন্দকে আমরা লালন করি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে সম্পর্কের মূল্যায়ন করতে গিয়ে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, সাংবাদিকদের কোন বন্ধু নেই বলে একটি কথার প্রচলন আছে। আমি বলি সাংবাদিকদের বন্ধু করতে নেই। অর্থাৎ সাংবাদিকদের বন্ধু করলে যে সংকটটি হয় সেটি হলো একটি পর্যায়ে গিয়ে তার পেশার কারণে এমন সংবাদ প্রকাশ করে যার দায় এড়ানো যায় না। নির্দিষ্ট সাংবাদিকদের বন্ধু না করে সমস্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকা উচিত। আমার বন্ধুত্বের যে উদার জমিন সেখানে পুরো সংবাদক্ষেত্রকে জায়গা দিতে চাই। আমি এর প্রতিদানও পেয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন অভিযাত্রায় সাংবাদিকদের অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও পাশে থাকার আহব্বান জানান অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। তিনি দুই দিনব্যাপী এই ফেস্টের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
উদ্বোধনী আলোচনা সভার অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র এ বি এম আনিছুজ্জামান, ত্রিশাল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মতিন সরকার। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান রাখায় আব্দুল মতিন সরকারকে মানপত্র দিয়ে সম্মাননা দেওয়া হয়। এছাড়া ইনভেস্টিগেটিভ ও ফিচার প্রতিবেদনের জন্য ৬জন সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়।