” কন্টেইনার ডিপো যেন ধ্বংসস্তুপ – চারিদিকে মানুষের পোড়া গন্ধ, মেডিকেলে বাড়ছে লাশের সংখ্যা, এখনও জ্বলছে আগুন “
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোর কর্মকর্তাদের ভুল-ভাল তথ্য ও অবহেলার জন্য এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অনেক মায়ের বুকের মানিকের মর্মান্তিক বিদায়, হৃদয় রক্তক্ষরণ, এসবের দায় কে নিভে, এমন অপূরণীয় ক্ষতির সমাধানের শেষ কোথায় ?
যখনই কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লেগেছে, তখন উপস্থিত শ্রমিক সহ কর্মকর্তারা পানি দিয়ে আগুন নিভানোর চেষ্টা করেছে, সেই চেষ্টা ব্যর্থতে পরিণত হলে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়, কুমিল্লা ইউনিটের ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিভানোর চেষ্টা করে, ডিপোর কর্মকর্তারা তাদেরকে ভুল তথ্য দিয়ে বলে রপ্তানির জন্য কাপড় রাখা কন্টেইনারে। কিন্তু আগুন পানি দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে কাজ হচ্ছিল না, কিছুক্ষণ পর পর বিষ্ফোরনের বিকট শব্দ, এর কারন হচ্ছে কন্টেইনারের ছিলো রাসায়নিক পদার্থ হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড। এই রাসায়নিক পদার্থের আগুন নিয়ন্ত্রণে করতে হলে ফোমের প্রয়োজন হয়, পানি দিয়ে কোনভাবেই সম্ভব নয়।
আগন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় সাধারণ জনগন সহ ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা অনেক হিমশিম খাচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ৭ জন সহ প্রায় ৪৩ জন লোকের লাশ উদ্ধার হয়েছে, আহত প্রায় ৪ শতাধিক। এখনও আগুন জ্বলছে , নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের লোকসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। গুরুতর আহতদেরকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকা আনা হচ্ছে। উদ্বারকারীরা এবং স্থানীয়রা বলছে আরো অনেক দ্বগ্ধ লাশ পাওয়ার আশঙ্কা, ডিপোর ধ্বংসস্তুপের একদম কাছাকাছি যাওয়া যাচ্ছে না, কারন এখনও কন্টেইনার ডিপোতে আগুন জ্বলছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল সহ বিভিন্ন হাসপাতালে ছুটে আসছেন আত্মীয় স্বজন সহ স্থানীয়রা। যে যেভাবে পারছে সহযোগিতা করতে ব্যস্ত। ডাক্তার নার্সরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন, সাধারণ জনগন এসে ভিড় করছেন রক্ত দিতে, প্রয়োজনীয় খাবার, পানি , ঔষধ সরবরাহ করার জন্য চেষ্টা করছেন।
বাংলাদেশ এমন দুর্ঘটনা মোকাবিলা করে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন আধুনিক যন্ত্রপাতি, যাহা বর্তমান অত্যন্ত কম বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ সহ দেশের সচেতন নাগরিক। কন্টেইনারের অব্যবস্থাপনা ও রাসায়নিক পদার্থ রাখাটা গোপন করার জন্য এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়েছে। কন্টেইনার ডিপোর কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও ভুল তথ্যের জন্য হারাতে হয়েছে অনেক প্রাণ, ঘটেছে ভয়াবহ আগুন, বিস্কোরণের শব্দে ক্ষেপেছে আশে পাশে অবস্থান করা লোকজন। ভেঙ্গেছে আশে পাশের অবস্থিত ঘর বাড়ির গ্লাস, এমনকি মসজিদের গ্লাসও রক্ষা পায় নি।
চর্তুদিকে লাশের পোড়া গন্ধ আর গন্ধ। এমন পরিস্থিতির দায় কে নিভে, হারিয়ে যাওয়া প্রাণ কি আর ফিরে পাবে তাদের পরিবার ?
✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com
❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।