ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৩ জানুয়ারি ২০২২

ঋনের চড়া সুদের ভারে নিঃস্ব আশুলিয়ার নাজির


জানুয়ারি ১৩, ২০২২ ৯:২৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঢাকার প্রধান শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জিরাবো নিশ্চিন্তপুরের মৃত ইনসু আলী ও মাতা মোছাঃ নাছিমা বেগমের পুত্র নাজির আহমেদ (৫০) ব্যাংকের দেনা মাথায় নিয়ে অসুস্থ হয়ে এখন দুইটি চোখ অন্ধ ও দুইটি কিডনি নষ্ট। তিনি সবার কাছে সাহায্যের আবেদন করেও কারো কাছে কোনো সাহায্য পাননি, এমনকি এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ কোনো প্রভাবশালীরা এগিয়ে আসেনি তার বিপদের সময়। তার ব্যক্তিগত বিকাশ নাম্বার (০১৯১০০৩৫৮৩২)। তার ২টি কিডনি ডেমিজ হওয়ায় প্রতি ৭দিন পর তার ওষুধসহ ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ লাগছে এবং ব্যাংকের দেনার টাকা দিতে না পেরে অসহায় হয়ে কাঁদতে কাঁদতে দুটি চোখ দিয়ে তিনি আর দুনিয়ার কিছুই দেখতে পারছেন না, এখন পুরোপুরিভাবে অন্ধ হয়ে গেছেন এই অসহায় মানুষটি।
জানা গেছে, আশুলিয়ার ডিইপিজেড শাখার মেঘনা ব্যাংক লিঃ থেকে ২০১৫ সালে ১০ বছরের চুক্তিতে ৪০লাখ টাকা লোন নিয়ে প্রায় ৪শতক জমির উপর ৩য় তলা বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করেন মোঃ নাজির আহমেদ কিন্তু অসুস্থতার কারণে নিয়মিত কিস্তি দিবে ব্যর্থ হোন তিনি। স্থানীয়রা জানান, এই লোনের টাকা নেওয়ার পর তিনি বাড়ি নির্মাণের কাজ ধরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন, এরপর থেকে ঠিকমত কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারেননি তিনি।
বর্তমানে নাজির আহমেদের দুইটি কিডনিই ডেমিজ হয়ে গেছে এবং দুইটি চোখ অন্ধ হয়ে অচল অবস্থায় আছেন। তার ২টি মেয়ে ও জমজ দুইটি শিশু ছেলেসহ পরিবার নিয়ে একবেলা খেয়ে আর অন্যবেলা না খেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
উক্ত অন্ধ অসুস্থ অসহায় মোঃ নাজির আহমেদ বলেন, আমি অনেক আশা করে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য মেঘনা ব্যাংকের আশুলিয়ার ডিইপিজেড শাখার থেকে জমি বন্দকী রেখে ৪০ লাখ টাকা উত্তলন করি। বাড়ির কাজ শেষ না হতেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় ঠিকমত কিস্তি দিতে পারিনি। তিনি বলেন, এখন আমার দুইটি কিডনি ডেমিজ হয়ে গেছে আর চোখেও দেখিনা অন্ধ হয়ে অচল মানুষ আমি। যেকোনো সময় মারা যেতে পারি, আমার মৃত্যুর পর ৪সন্তান ও পরিবারকে কে দেখবে? আর কিভাবে চলবে তাদের জীবন এই চিন্তায় ঘুম হয় না আমার। ব্যাংকের লোনের টাকার জন্য খুবই চিন্তায় আছি, আমি সমাজ ও দেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন করছি, সবাই যদি আমার অসহায় পরিবারের জন্য সাহায্য সহযোগিতা করেন, তাহলে মৃত্যুর সময় শান্তি পেতাম। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের লোনের সুদ নয় আসল টাকা দেওয়ার ইচ্ছা আছে, আমার বাড়িটি বিক্রি করতে পারলে তা দিয়ে দিতে পারতাম। আমি যদি কারো কাছে কোনো ভুল বা অপরাধ করে থাকি সবাই আমাকে ক্ষমা করবেন বলে তিনি কান্নাজনিত অবস্থায় বলেন, আমার মৃত্যুর পর আমার সন্তানদের ও পরিবারকে দেখবেন এবং সাহায্য সহযোগিতা করবেন, এতে আমি শান্তি পাবো।
উক্ত ব্যাপারে মেঘনা ব্যাংক লিঃ এর কর্মকর্তা এমডি, এম, এ কায়সার গণমাধ্যমকে বলেন, আশুলিয়ার নিশিাচন্তাপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ নাজির আহমেদ ৪০ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে তার বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করেন, এর মধ্যে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন, এর কারণে নির্মাণ কাজ থেমে যায়। তাকে অনেক সুযোগ দেওয়ার পরও তিনি ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। তবে নাজির আহমেদ অসুস্থ, তার দুইটি কিডনি ডেমিজ এবং অন্ধ হয়েছেন বলে তিনি জানান। জানা গেছে, ব্যাংক কর্মকর্তা অনৈতিক ভাবে অর্থ নিয়ে জমির কাগজপত্র বন্দকী রেখে তাদের লোনের ওপর কিস্তির টাকা দিয়েছেন। তার বাড়িতে যাওয়ার রাস্তার বেহাল অবস্থা-এ বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। আশুলিয়ায় এরকম কিস্তির টাকা নিয়ে অনেকেই বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
উক্ত নাজির আহমেদ এর পরিবার দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমার স্বামী বিদেশ ছিলেন, তখন আমাদের অনেক ভালো ভাবে
সংসার চলছিলো, দেশে আসার পর আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েন, তিনি এখন চোখে কিছুই দেখেন না, দুইটি কিডনিও নষ্ট হয়েছে তার, আমি আমার আত্মীয়স্বজন সবার কাছে সাহায্য চেয়েও তেমন কিছু সাহায্য পাইনি।
সমাজের সকলের কাছে আমার স্বামীর জন্য সাহায্য সহযোগিতা চাই, সেই সাথে সকলের কাছে দোয়া কামনা করছি।

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ  বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com ❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।