সাভারে রবিউল ইসলাম লস্কর (৪২) নামে এক হোটেল ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের আরো ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশন) পিবিআই ঢাকা জেলা। গ্রেফতারকৃতরা হলেন লক্ষ্মীপুর সদর থানার বিনোদধর্মিপুর গ্রামের মৃত মমিন উল্লাহর ছেলে মো. আজাদ হোসেন জাবেদ মুরগী জাবেদ (৩৮), এবং সাভার থানার গেন্ডা এলাকার রহমত আলির ছেলে মো. আ. রহিম, এ আর মাহমুদ (৫১)। সোমবার (৯ আগস্ট) গভীর রাতে সাভার থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সালেহ ইমরান জানিয়েছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুজনেই উক্ত ডাকাতির সাথে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং তাদের দুজনকেই আজ মঙ্গলবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করানোর জন্য আদালতে প্রেরণ করা হবে। গ্রেফতারকৃত জাবেদ সাভার বাস স্ট্যান্ড এলাকায় মুরগী ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসা এবং ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। অপরদিকে গ্রেফতারকৃত আ. রহিম এর স্থায়ী কোন ঠিকানা না থাকায় সে বিভিন্ন অপকর্ম করে কিছুদিন পর স্থান পরিবর্তন করত।মঙ্গলবার পিবিআই ঢাকা জেলা অফিস থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ৫ই অক্টোবর নিহত হোটেল ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম লস্কর ভাগিনার সাথে দেখা করার জন্য কর্মস্থল মিরপুর থেকে সাভারের জামগড়ার যান। ভাগিনার সাথে দেখা করে স্থানীয় ইসলামিয়া হোটেল মালিকের সাথে দেখা করার কথা বলে বিকেলে জামগড়া ত্যাগ করেন। ওইদিন সন্ধ্যা ৭ টার সময় তার ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে মেয়ের সাথে শেষ কথা বলেন তিনি। পরে রাত ১২টার দিকে একই মোবাইল থেকে তার মায়ের ফোন নম্বরে ফোন করে রবিউল খুন হয়েছে বলে জানায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। পরে সাভারের বলিয়ারপুরের যমুনা ন্যাচারাল পার্কের গেটের পাশ থেকে রবিউল ইসলাম লস্করের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এঘটনায় নিহতের স্ত্রী হাফিজা বেগম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৬। পরে মামলাটির তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা জেলার এসআই সালেহ ইমরান। এঘটনায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১৩ই অক্টোবর সাভার থেকে ডাকাত দলনেতা বসির মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই ও ডেমরা থেকে আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সকলেই বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন। এ নিয়ে এই মামলায় মোট ১৩ জন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই সালেহ ইমরান জানান, গত ৪ অক্টোবর গ্রেপ্তারকৃতরা ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটের নিরালা পরিবহনের একটি বাস কুয়াকাটা যাওয়ার কথা বলে ৩ দিনের জন্য রিজার্ভ নেয়। পরে ওই বাস দিয়ে মানিকগঞ্জ ও রাজবাড়িতে ডাকাতির কাজ শেষ করে ফেরার সময় নিহত রবিউল আশুলিয়ার নবীনগর থেকে ওই বাসে উঠে। বাসের ভেতরে ডাকাতির সময় রবিউল চিৎকার করলে তাকে ডাকাত সদস্যরা চেপে ধরে ও দলনেতা হুইলরেঞ্জ দিয়ে আঘাত করে। এসময় ঘটনাস্থলেই রবিউল মারা যায়। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই ড্রাইভার ও হেলপার। তারা সাভার, ধামরাই ও যাত্রাবাড়িতে থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত দল প্রতিষ্ঠা করে দীর্ঘদিন ধরে বাসে ডাকাতি করে আসছিল। বিভিন্ন রুটের গাড়ি ভাড়া নিয়ে স্টিকার পরিবর্তন করে রং দিয়ে বিভিন্ন রুটের নাম লিখে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ডাকাতি করে আসছিলো চক্রটি।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭