কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা সুমি বেগম (২৪) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের সাথে ছিল ১০ মাস বয়সের এক শিশু। এ সময় মৃত মায়ের বুকে আহাজারি করছিল দুগ্ধ ওই শিশুটি। এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে স্যোশাল মিডিয়ায়। তাতে অভিযোগ করা হয়েছে নার্সদের অবহেলায় গৃহবধূ সুমির মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধূ সুমি কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের মন্নান মিয়ার মেয়ে।
নিহতের স্বজনরা জানান, গত সাপ্তাহে মৌলভীবাজারের খলিলপুর ইউনিয়নের সরকারবাজার এলাকার এমরান মিয়ার স্ত্রী এক সন্তানের জননী সুমি বেগম বাবার বাড়ি কমলগঞ্জে বেড়াতে আসেন। বুধবার দুপুরে তার পেটব্যথা দেখা দিলে তাকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করে হাসপাতালে সাধারণ মহিলা ওয়ার্ডে নিয়ে আসলে তার অবস্থা আশংকাজনক হয়।
তা দেখে সুমির মা রাহেনা বেগম ও বাবা মন্নান মিয়া ডিউটিরত ডাক্তার ও সিনিয়র নার্সদের কাছে বারবার উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার নিয়ে যেতে তাগাদা দেন। কিন্তু তাদের কথার কর্ণপাত করেন নি ডাক্তার-নার্সরা। পরে দুপুর ১২টায় সুমির অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে সিনিয়র নার্স অনিতা সিনহা ও মিডওয়াইফ রত্না মন্ডল তাকে একটি ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর থেকেই সুমি নড়াছড়া বন্ধ হয়।
বিষয়টি ডিউটি ডাক্তার মুন্না সিনহা ও নার্সদের জানালে তারা বিরক্তিস্বরে বলেন- রোগী ঘুমিয়ে আছেন, ডিস্টার্ব করবেন না। বিকাল পর্যন্ত রোগীর নড়াচড়া না পেয়ে স্বজনরা নার্সকে জানালে নার্সরা ডাক্তার মুন্না সিনহাকে নিয়ে আসেন। পরে সুমিকে পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ সময় মৃত মায়ের বুকে আহাজারি করছিল তার ১০ মাসের দুগ্ধ শিশু তানিশা।
মৃত সুমির মা রাহেনা বেগম অভিযোগ করেন, আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য হাসপাতালের নার্স এবং ডিউটি ডাক্তারই দায়ী। আমরা তাদের বিচার চাই। তবে ডিউটি ডাক্তার মুন্না সিনহা ও মিডওয়াইফ রত্না মন্ডল অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চিকিৎসার কোন ত্রুটি ছিল না। মৃত রোগীর স্বজনরা রোগীকে রেফারের জন্যও তাদের বলেনি। কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার সাজেদুল কবির বলেন, এ বিষয়ে তদন্তক্রমে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।