টিকা না পেয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসীরা। বৃহস্পতিবার সকালে সারা দেশ থেকে আসা প্রায় দুই শতাধিক প্রবাসী কর্মী বিক্ষোভে অংশ নেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ও সচিব বিক্ষোভকারীদের টিকা প্রাপ্তি সহজলভ্য করার আশ্বাস দেন। রাজধানী ঢাকার সাতটি হাসপাতালে প্রবাসী কর্মীদের ফাইজার বায়োএনটেকের টিকা দেয়া হবে- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমন খবরের ভিত্তিতে গতকাল সকাল থেকেই ওইসব টিকাকেন্দ্রে ভিড় করেন সারা দেশ থেকে আসা প্রবাসী কর্মীরা। তাদের মধ্যে কেউ কেউ করোনার টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করলেও মোবাইলে এসএমএস পাননি। আবার অনেকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবগত নন। সৌদি আরব ও কুয়েত প্রবাসীদের এই টিকা দেয়ার কথা থাকলেও এদিন টিকাদান কেন্দ্রে ইতালি ও অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে এসে আটকে পড়া প্রবাসীরাও ভিড় করেন। এ সময় তারা টিকার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
ঘটনাস্থলে এসে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসীরা ভ্যাকসিন পেতে নিবন্ধন করতে পারবেন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। সে ব্যবস্থার ছোট্ট একটা প্রতীকী উদ্বোধন হলো আজ। এটা আমরা ৫-৭ জনকে দিয়ে করতে চেয়েছিলাম। সচিব বলেন, আমরা বোঝাতে চাই যে, আপনাদের সঙ্গে আছি। এই মন্ত্রণালয় আপনাদের জন্য কাজ করছে এবং ভ্যাকসিনের এই সংকটের মধ্যেও এ উদ্যোগ নিয়েছি। এ সময় প্রবাসীরা হট্টগোল শুরু করলে সচিব সবাইকে থামার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, প্লিজ আপনারা থামেন। আমরা কেউ আপনাদের চেয়ে কম প্যানিকড (আতঙ্কগ্রস্ত) না। আপনারা সবাই আমাদের সম্পদ। এই জিনিসটা শুধু আমরা মুখে বলি না, করিও। এ সময় প্রবাসীদের আশ্বাস দিয়ে সচিব বলেন, এবার টিকার জন্য মাত্র চারটা সেকশন উদ্বোধন করা হয়েছে। এরমধ্যে পুলিশ, মেডিক্যাল ছাত্র আর আপনারাও রয়েছেন। এটা করা হয়েছে শুধু আমাদের উদ্যোগে। আগামী সোমবার থেকে আপনারা সবাই অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। প্রবাসী কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি যে অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করবেন, এটা কীভাবে করবেন? এটা কীভাবে বোঝা যাবে, যখন আপনার নামটি আমি সিস্টেমের মাধ্যমে ওখানে পাঠাবো। আমি আপনার নাম এখন লিখে নিলাম, হাতে হাতে এটা পৌঁছে দিলাম, এটা হবে না। এরপর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, অধৈর্য হলে কোনো সমাধান আসবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ৭টা হসপিটালে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা। কিন্তু সময় তো থাকতে হবে। ব্যবস্থাপনা করতে কিছুটা সময় দরকার। তিনি বলেন, রোববার বা সোমবারের দিকে ভ্যাকসিন নিবন্ধনের ব্যবস্থা হবে। সৌদি আরব ও কুয়েত ফাইজারের টিকার কথা বলছে। যাতে ১টা ডোজ নিলে সে দেশে গিয়ে বাকিটা নিতে পারে। ফাইজারের সিঙ্গেল ডোজ এখন কেবল কুর্মিটোলায় আছে। তিনি বলেন, সুরক্ষা অ্যাপ এখনো চালু হয়নি। রোববার বা সোমবারের দিকে চালু হওয়ার কথা। আপনারা জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো-বিএমইটিতে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিন। নাম আর পাসপোর্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চলে যাবে। সেখানে বলে দেয়া হবে কে কোন হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেবেন।
মন্ত্রী বলেন, আজকের ভ্যাকসিন যারা পাচ্ছে রিক্রুটিং এজেন্সি থেকেই পাচ্ছে। এটা ট্রায়াল। একটু ধৈর্য ধরেন, আজ-কালের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে। যাদের সময় শেষ কিংবা মেয়াদ নেই, সবাইকে বিএমইটিতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তাদের রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া হবে মন্ত্রণালয় থেকে। বিক্ষোভের বিষয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহান হক বলেন, আনুমানিক দুই থেকে আড়াইশ’ বিদেশগামী লোকজন টিকা নিতে কুর্মিটোলা হাসপাতালে আসেন। সেখানে টিকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় তারা বিক্ষোভ করেন। কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছে নিয়ম অনুযায়ী সবাইকে টিকা দেয়া হবে। প্রসঙ্গত, ১লা জুলাই কার্যক্রম শুরুর দিনে ফাইজারের ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কেন্দ্রে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭