শ্যালক ও দুলাভাই মিলে ট্রাকে করে লবণ পরিবহণের আড়ালে আসন্ন ঈদকে ঘিরে ইয়াবা পাচারের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন। দুলাভাইয়ের নাম বাচ্চু মিয়া। আর শ্যালকের নাম সুলতান মাহমুদ। ট্রাকের ভেতরে বিশেষ কায়দায় ও সিটের নিচে লুকিয়ে তারা ইয়াবা পাচার করতেন।
কক্সবাজার থেকে একটি চালান ঢাকায় আনতে পারলেই তাদের আয় হতো সাত লাখ টাকা। শুক্রবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গ্রেফতারের পর তারা নিজেরাই এসব তথ্য জানিয়েছে।
ডিবি সূত্র জানায়, গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম খিলক্ষেত থানা এলাকার কুরাতলী এলাকায় শুক্রবার মাদকবিরোধী একটি অভিযান চালায়। সকাল সাড়ে ১০টায় চালানো এ অভিযানে লবণ ভর্তি একটি ট্রাক জব্দ করা হয়। আন্তঃজেলায় চলাচলকারী ট্রাকটিতে প্রাথমিকভাবে ১৩ দশমিক ৫ টন লবণ পাওয়া যায়। ব্যাপক খোঁজাখুঁজির পর ট্রাকের বিভিন্ন পার্টসের মধ্যে ও সিটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা অবস্থা থেকে একে একে প্রায় ৫০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। জব্দকৃত ইয়াবার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। দীর্ঘদিন ধরে টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে মাদক বিশেষ কায়দায় পরিবহণ করছিল শ্যালক-দুলাভাই।গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে ডিবির উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান , দীর্ঘদিন ধরে তারা বগুড়া শেরপুরের বিভিন্ন মিল থেকে চাল কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ থানাধীন বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বহন করে নিয়ে যেত। ফেরার পথে তারা ইয়াবার বিভিন্ন পাইকারদের কাছ থেকে ঢাকা, গাজীপুর, রাজশাহী, রংপুর এবং বগুড়া অঞ্চলে ইয়াবার চালান নিয়ে আসতো।
ধরা পড়া চালানটি সফলভাবে পৌঁছাতে পারলে শ্যালক-দুলাভাই ৭ লাখ টাকা পেত। এর যার ৭০ শতাংশ দুলাভাই এবং ৩০ শতাংশ পেতো শ্যালক।ডিসি মশিউর রহমান আরও বলেন, কোরবানির ঈদের সময় চামড়া সংরক্ষণের জন্য প্রচুর পরিমাণে লবনের দরকার হয়। সেজন্য ঈদুল আযহার সময় লবণ একটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ বিবেচনায় হাইওয়ে পুলিশ, জেলা এবং মেট্রোর ট্রাফিক পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব ট্রাক নির্বিঘ্ন যাতায়াতের ব্যবস্থা করে থাকে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এই কুচক্রী মহল এত বড় একটি চালান বহন করছিল।
গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে, এর আগে তারা তিনটি চালান এই কৌশলে বহন করে পৌঁছে দিয়েছিল বিভিন্ন ইয়াবা কারবারিদের কাছে।