"তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না" শিরোনামে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় একটি রাজনৈতিক প্রতিবেদনের প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তি হিসাবে বিএনপির উপর বার বার আঘাত এসেছে। হয়েছে অনেক দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র। বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে শাহাদাত বরণ করেন। ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবেছিল জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপি বিলীন হয়ে যাবে। তাদের সেই ধারণা ভুল প্রমান করে পরবর্তি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বিচারপতি আবদুস সাত্তার আওয়ামিলীগ মনোনীত প্রার্থী ড. কামাল হোসেনকে প্রায় দ্বিগুণ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। নির্বাচনের তিন মাসের মাথায় দুর্নীত, স্বজনপ্রীতি ও ব্যর্থতার অভিযোগ তোলে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে তৎকালীন সেনাপ্রধান হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ রাতের অন্ধকারে অস্ত্রের জোরে ক্ষমতা দখল করে। তিনিও বিএনপিকে নিঃশেষ করার মানসে গভীর ষড়যন্ত্র লিপ্ত হন। বার-বার দল ভাঙ্গা ও চলে বলে কৌশলে বিএনপির বেশ কিছু নেতাকে তার দলে ভেড়ান।
দেশমাতৃকার টানে এবং বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষে শহীদ জিয়ার বিধবা পত্নী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির হাল ধরেন। দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরশাসক বিরোধী আন্দোলনের দৃঢ়তার সহিত নেতৃত্ব দেওয়ায় আপোষহীন নেত্রী হিসাবে জনগনের আস্তা অর্জন করেন। বেগম জিয়ার নেতৃত্বে ৯০ সালে স্বৈরাচারের পতন ঘটে। ৯১ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বিপুল বিজয় অর্জন করে এবং বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু ষড়যন্ত্র বিএনপির পিচু ছাড়েনি।
চলমান গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তে ১/১১ তে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা দখল করে। ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার মাইনাস-টু ফর্মুলা নিয়ে এগুতে চাইলেও বেগম জিয়ার দৃঢ়তায় বাধাগ্রস্ত হয়ে ষড়যন্ত্রের নতুন মোড় নেয়। আর তাহল রাজনীতি থেকে জিয়া পরিবারকে উৎখাত। যাহা আজও বিদ্যমান রয়েছে।
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের দোষর বর্তমান স্বৈরাচারিনী শেখ হাসিনার সরকার মিথ্যা অজুহাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতের মাধ্যমে ফরমায়েশি রায় দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করে। নেতৃত্বের চলমান ধারায় তারেক রহমান সিঃ ভাইস চেয়ারম্যান থেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তিনি উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। তিনি রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করে রাজনীতির সংস্পর্শে বেড়ে উঠলেও দলের প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে বিএনপির রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং ধাপে ধাপে আজকের এই পর্যায়ে উপনীত হন।
একজন কর্মীবান্ধব নেতা হিসাবে তিনি সকলের কাছে সমাদৃত। দীর্ঘ ত্যাগ-তিতিক্ষা, শ্রম, মেধা যোগ্যতা দিয়েই তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তার বাবা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য "বীর উত্তম" খেতাবে ভূষিত হন। তার মা বাংলাদেশের তিন-তিনবারের নির্বচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জনতার অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আপোষহীন নেতৃত্বের কারণে "দেশনেত্রী" ও "মাদার অব ডেমোক্রেসি" উপাধিতে ভূষিত হন। মা-বাবার সান্নিধ্যে থেকে জনাব তারেক রহমান পরিবার ও সমাজ থেকে রাজনৈতিক দীক্ষা লাভ করেন।
দলে তাঁর নেতৃত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত ও প্রশ্নাতীত। তাঁর যোগ্যতর নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধ থকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামিলীগ সরকারের জেল, জুলুম, নির্যাতিত, গুম, খুনের বিরুদ্ধে বিএনপি তাঁর নেতৃত্বেই রাজপথে সরব রয়েছেন।
অতিতের সকল স্থবিরতা কাটিয়ে সাংগঠনকে গতিশীল করার লক্ষ্যে তিনি সারাদেশে একযোগে সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন, সফলতার প্রত্যাসায় প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করছেন। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা অনেক কঠিন হলেও তিনি সাহসিকতার সহিত এগিয়ে যাচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন, কখনোই কোনো সিদ্ধান্তই ঝুলন্ত রাখেন না। দল বিকশিত ও শক্তিশালী হোক তা অনেকেই চান না। দলকে যারা এতদিন কুক্ষিগত করে রেখেছেন তাদের একটু মর্মবেদনা থাকলেও তাঁর কর্মকাণ্ডে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা খুশি। ওয়ার্ড থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত আজ নতুন জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাসিত জীবন যাপন করলেও তারেক রহমানের ভাবনা শুধু বাংলাদেশকে নিয়ে। তিনি এই মাটির সন্তান, এই মাটি তার শেষ ঠিকানা। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মায়ের সাথে কারাগারে থেকেছেন। কিশোর বয়সে ঘাতকদের হাতে বাবাকে হারিয়েছেন। ষড়যন্ত্রকারীদের নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্রে ভাই কে হারিয়েছে। স্বাধীনতা ৫০ বছর পরেও অসুস্থ্য মা আজ কারাগারে। তাঁর আর হারাবার কি'বা আছে। যার ধমনীতে শহীদ জিয়ার রক্ত প্রবাহিত তিনি দমে যাবার নয়।
নির্বাসনে থাকেও দেশমাতৃকার টানে জীবন বাজি রেখে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন। যা ষড়যন্ত্রকারীদের কে আবার ভাবিয়ে তুলেছে। হয়ত জাতির ভাগ্যাকাশে আবার নতুন কোন মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে। দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী শক্তিকে এ মুহূর্তে সজাগ থাকতে হবে। দৈনিক প্রথম আলোর মতো জাতীয় পত্রিকায় এই ধরণের প্রতিবেদন গতানুগতিক নয়। হয়তো এই ধরণের প্রতিবেদন সাথে রাজনৈতিক গভীর ষড়যন্ত্র নিহিত থাকতে পারে। এই প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য দৈনিক প্রথম আলোর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং প্রতিবেদনটি প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাই।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭