করোনা সংক্রমণের ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের পর এবার নতুন আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে হোয়াইট ফাঙ্গাস বা সাদা ছত্রাক। ভারতীয় চিকিৎসকদের উদ্ধৃত করে দেশটির গণমাধ্যম বলছে, হোয়াইট ফাঙ্গাস তার আগে চিহ্নিত হওয়া ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক ও ভয়াবহ। খবর বিবিসির।
দেশটির জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মুশতাক হোসেন বিবিসিকে বলছেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে ইতোমধ্যেই ভারতের জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এখন নতুন করে হোয়াইট ফাঙ্গাসের কথা আসছে। পর্যাপ্ত গবেষণা হলে পার্থক্যটা বোঝা যাবে। তবে যে কোন ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয় অতিরিক্ত স্টেরয়েড ব্যবহারের কারণে। করোনা রোগীদের বিশেষ করে আইসিইউতে থাকা রোগীদের চিকিৎসার প্রয়োজনে স্টেরয়েড দিতে হয়।
করোনা থেকে সেরে ওঠার পর অনেকের দেখা যাচ্ছে ফাঙ্গাল ইনফেকশন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সেটারই এখন নানা ধরণ নানা ভাবে প্রকাশ পাচ্ছে বলে জানান ওই বিশেষজ্ঞ।
ওদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, দেশটির বিহার রাজ্যে অন্তত চারজন হোয়াইট ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হয়েছেন। তবে তারা করোনা আক্রান্ত হননি। কিন্তু করোনার লক্ষণ থাকলেও পরীক্ষায় তা ধরা পড়েনি।
ভারতের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন কোভিড থেকে আরোগ্যের পথে বা সুস্থ হয়ে ওঠাদের শরীরে বিরল যে সংক্রমণ- যার নাম ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা বৈজ্ঞানিক নাম মিউকোরমাইকোসিস।
মিউকোরমাইকোসিস খুবই বিরল একটা সংক্রমণ। মিউকোর নামে একটি ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে এই সংক্রমণ হয়। সাধারণত এই ছত্রাক পাওয়া যায় মাটি, গাছপালা, সার এবং পচন ধরা ফল ও শাকসবজিতে।
এই ছত্রাক সাইনাস, মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। ডায়াবেটিস, ক্যান্সার বা এইচআইভি/এইডস যাদের আছে, কিংবা করোনা বা অন্য কোন রোগের কারণে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম এই মিউকোর থেকে তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
ডা: মুশতাক হোসেন বলছেন, স্টেরয়েডের ব্যবহার থেকে এই সংক্রমণ শুরু হতে পারে। কোভিড-১৯এ গুরুতরভাবে আক্রান্তদের চিকিৎসায় তাদের জীবন বাঁচাতে এখন স্টেরয়েড দিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের জীবাণুর সাথে লড়াই করতে গিয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে যেসব ক্ষতি হয় সেই ক্ষতি থামানোর জন্যও ডাক্তাররা কোভিডের চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহার করেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে শরীরে থাকা ফাঙ্গাল ইনফেকশন চাড়া দিয়ে ওঠে। এখন ভারতীয় চিকিৎসকরা বলছেন, এটার বিপজ্জনক রূপ হলো হোয়াইট ফাঙ্গাস বা সাদা ছত্রাক। এই রোগের প্রভাবে ফুসফুসজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে। পেট, যকৃত, মস্তিষ্ক, নখ, ত্বক এবং গোপনাঙ্গেও ক্ষতি করতে পারে হোয়াইট ফাঙ্গাস।
তবে হোয়াইট ফাঙ্গাস সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এ পর্যন্ত যে কয়েকজন রোগী পাওয়া গেছে, তাদের লক্ষণ দেখে চিকিৎসকরা ধারণা করছেন হোয়াইট ফাঙ্গাস আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                    
 
                                    
 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                 
                                