জেলা প্রতিনিধিঃ পদ বাগিয়ে নিতে লবিংয়ে ব্যস্ত সিলেট ছাত্রলীগের ৬ গ্রুপের নীতিনির্ধারকরা। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে চলছে কাড়াকাড়ি। তবে ছাত্রলীগের আসন্ন কমিটি নিয়ে যাতে কোনো বিরোধ না বাধে, সে কারণে গ্রুপের শীর্ষ ব্যক্তিরা নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করছেন। বিরোধ কমিয়ে তারা এবার সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করতে চাইছেন। এ নিয়ে ইতিমধ্যে তাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। গত শনিবার ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বরণ করতে গিয়েছিলেন ৫ নেতা। তাদের নেতৃত্বে রয়েছে আলাদা আলাদা গ্রুপ। এসব গ্রুপই নিয়ন্ত্রণ করে সিলেট ছাত্রলীগকে।
তৃণমূলের নেতারা জানান, গ্রুপিংয়ের কারণেই সিলেটে ছাত্রলীগ বিতর্কিত হয়েছে। সরকার ক্ষমতায় থাকলেও গত ৪ বছর সিলেটে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি ছিল না। তবে সিলেট ছাড়ার প্রাক্কালে শনিবার রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন- গ্রুপিং দলের রাজনীতিকে দুর্বল করে। এখানে সবাই এক দলের। এ কারণে গ্রুপিং রাজনীতি না করার আহ্বান জানান তারা। এর আগে সিলেটের কবি নজরুল অডিটোরিয়ামের সমাবেশেও তারা একই কথা বলেন। তবে সিলেট ছাত্রলীগে কে শোনে কার কথা। গ্রুপ ছাড়া কল্পনা করা যায় না সিলেট ছাত্রলীগকে। সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঢাকায় ফিরে যাওয়ার পরপরই শুরু হয়েছে পদ বাগিয়ে নিতে লবিং। এতে সক্রিয় হয়েছেন ৬ গ্রুপের নিয়ন্ত্রকরা। সিলেট ছাত্রলীগের মধ্যে টিলাগড়ে রয়েছে দুটি, দর্শনদেউরীতে একটি, তেলিহাওরে একটি, রিকারীবাজারে একটি ও সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের এক নেতার ছত্রছায়ায় আরো একটি গ্রুপ গড়ে উঠেছে। এসব গ্রুপই হচ্ছে সিলেট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রাণ। গ্রুপিং রাজনীতির কারণে সিলেট ছাত্রলীগে অতীতে তুমুল বিতর্কিত হয়েছে। এক গ্রুপ অন্য গ্রুপকে ঘায়েল করতে প্রকাশ্য রাজপথে অস্ত্রের মহড়া দিয়েছেন। এমনকি গ্রুপিং রাজনীতিতে হয়েছে খুনোখুনি। এসব কারণে সিলেট ছাত্রলীগের কমিটি বিগত ৪ বছর ধরে দেয়া হচ্ছে না। ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবার সিলেটে কমিটি দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী। ইতিমধ্যে সিভি সংগ্রহ সহ নানা অনুসন্ধান-পর্ব শেষ করা হয়েছে। এখন চলছে লবিং। ঢাকায় গিয়ে লবিং করা হচ্ছে। পদবি প্রত্যাশী নেতারাও ইতিমধ্যে ঢাকায় দৌড়ঝাঁপ করেছেন। আলোচনায় যারা আছেন তারা সবাই নতুন মুখ। এর মধ্যে অনেকেই রাজপথের পরিচিত মুখ। আবার অনেকেই আছেন অপরিচিত মুখ। এবার সিলেট জেলা সভাপতি পদে আলোচিত হচ্ছে কয়েক জন ছাত্রনেতার নাম। এর মধ্যে রয়েছেন- সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান, জেলার সাবেক সদস্য কাওসার আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অসিম কান্তি কর, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কনক পাল অরূপ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য নাজমুল ইসলাম। আর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন- জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য এ এম ফারহান সাদিক, সিলেট ল’ কলেজের শিক্ষার্থী এস এম রুবেল আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-পাঠাগার সম্পাদক এম আর মুহিব, মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল ইসলাম রাহাত, এমসি কলেজের ছাত্রলীগ নেতা রুবায়েত আহমদ শাকিল। সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন- সাবেক নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ আলম শাওন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য শাফায়েত খান, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির হুসাইন মোহাম্মদ সাগর, সিলেট ল’ কলেজের শিক্ষার্থী সাদিকুর রহমান সাদিক। মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন- এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সাদেকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য কিশোর জাহান সৌরভ, কাজী জুবায়ের আহমদ, মহানগর কমিটির সাবেক উপ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক নাসিফ শামস তিয়াস, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ময়জুল ইসলাম রাহাত, মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল হাসান সানী।