বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি বরাবর (ওসি) বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভুগী নারী। বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি বরাবর ভোলার ওসি এনায়েত ও এসআই রতন শীলের বিরুদ্দে নির্যাতনের শিকার এক নারী ও শিশু কন্যা ! ডিআইজি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভোলা সদর থানার ইলিশা পুলিশ ফাঁড়ির এস আই রতন কুমার শীল ও সদর থানার ওসি এনায়েত হোসেনের বিচার চেয়ে সকাল ১১ টায় বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্বামী পরিত্যাক্তা ভুক্তভোগী নারী। ওই নারী গতকাল ২০/০১/২১/ ভোলা সদর থানার ওসি এনায়েত হোসেন ও ইলিশা ফাঁড়ির ইনচার্জ রতন কুমার শীলের অমানবিক অশ্রাব্য ভাষা ও অশালীন, কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি, বিব্রতকর আচরণের বিচারের দাবি ও পুলিশি ভয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে না পারায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে এ লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়,বরিশালের কাউনিয়া থানা থেকে স্বামী পরিত্যাক্তা সেউলি (ছদ্মনাম) নারীকে রাতের অন্ধকারে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে মিথ্যা অপহরণ মামলায় সন্ধিগ্ধ আসামি দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণের করে ভোলা ইলিশা ফাঁড়ির ইনচার্জ রতন কুমার শীল। ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নানা রকম অশ্রাব্য, অশালীন ব্যবহার ও কুরুচিপূর্ণ আচরণ করে ভোলা সদর থানার ওসি এনায়েত ও ইলিশা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রতন কুমার শীল। গত ২৮ নভেম্বর ২০২০ তারিখ দিবাগত রাত অনুমান তিনটায় ভোলার সদর থানার ইলিশা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই রতন কুমার শীলের নেতৃত্বে পুলিশের ৬-৭ জনের একটি টীম ও দুই সন্ত্রাসী(যারা বিভিন্ন মামলার এজাহারনামীয় আসামি) বরিশাল সদর থানাধীন কাউনিয়ার পীতাম্বরকাঠি এলাকায় সিউলী (ছদ্মনাম) নামের স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীর বাড়িতে সন্ত্রাসী কায়দায় হানা দেয়। গভীর রাতে পুলিশ ও দুই সন্ত্রাসী নারী পুলিশ ব্যতীত ঐ নারীর বাড়িতে হানা দিয়ে ঘরের দরজায় সজোরে আঘাত করে দরজা খোলার জন্য চেঁচামেচি করে এবং নিজেদেরকে আইনের লোক বলে পরিচয় দেয়। চেঁচামেচি একপর্যায়ে তার বৃদ্ধি মা দরজা খুলে দিলে দারোগা রতন কুমার শীল তার সংগীয় ফোর্স ও সন্ত্রাসী দুজন বিনা অনুমতিতে সন্ত্রাসী কায়দায় ঘরে প্রবেশ করে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ, অশ্রাব্য আচরণ করে। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা(পুলিশ) ঐ নারীকে বিনা অভিযোগে কোন মহিলা পুলিশ ব্যতীত বিধিবহির্ভূতভাবে আটক করে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর অঙ্গে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি,চর থাপ্পর মারে এবং নানা প্রকার অশালীন, কুরুচিপূর্ণ আচরণ করে।পুলিশের এমন জঘন্য, ঘৃণিত, ন্যক্কারজনক কাজে ওই দুই সন্ত্রাসীও সহায়তা করে বলে জানা যায়। টানাহেঁচড়ার একপর্যায়ে ঐ নারীর সাত বছরের কন্যা শিশুসহ সন্ত্রাসী কায়দায় জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করে। এ সময় শিশু কন্যাটি ভয়ে চিৎকার করলে এবং পুলিশের চেঁচামেচিতে তখন আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে অনেকেই তাকে আটকের কারণ জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু পুলিশ তাদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে উল্টো তাদেরকে হুমকি ধমকি ভয় ভীতি দেখিয়ে ঐ নারী ও তার অবুঝ কন্যা শিশুকে স্পীড বোট যোগে বরিশালের কাউনিয়া থানায় না নিয়ে উল্টো সরাসরি ভোলার ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে দিনভর আটকের পর অর্থাৎ ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় থাকে ভোলা সদর মডেল থানায় নেওয়া হয়। সেখানে থানার ওসি মোঃ এনায়েত হোসেন জিজ্ঞাসাবাদের নামে ঐ নারীকে অশ্লীল অশ্রাব্য প্রশ্ন ও কুরুচিপূর্ণ আচরণ করে সারারাত থানায় আটক রেখে পরদিন অর্থাৎ ৩০/১১/২০২০ তারিখ বিকাল বেলা ৩ টায় প্রায় ৩৮ ঘন্টার অধিক সময় (প্রায় দুইদিন) ইলিশা তদন্ত কেন্দ্র ও থানায় আটক রাখার পর জনৈক আলমগীর মাতাব্বরের দায়েরকৃত জিআর ৭০০/২০ দঃবিঃ ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৩/৩৬৪ মামলায় সন্দিগ্ধ আসামী দেখিয়ে তার কন্যা শিশুসহ আদালতে মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। তখন ওই নারীর আত্মীয়-স্বজন তাকে আটক করার কারণ জানতে চাইলে, ওসি এনায়েত হোসেন ও ইলিশা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই রতন কুমার শীল ঐ নারীকে আটকের কোন সদুত্তর না দিয়ে তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি দেখায় এবং ওই মহিলাকে রিমান্ডে এনে নির্যাতনের হুমকি দেয় । এরপর ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে ইলিশা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রতন কুমার শীল মিথ্যা বায়বীয় অপহরণ মামলায় ওই নারীর পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত শুনানি শেষে রিমান্ড বাতিলের আদেশ দেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুলিশের সাথে থাকা ওই দুই সন্ত্রাসী হচ্ছে ভোলা সদর থানা রাজাপুর ইউনিয়নের ওহাব চৌকিদারের পুত্র মোঃ সাদ্দাম ও তার ভাগ্নে মাহফুজ। ইতোপূর্বে ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ডাকাতি, সন্ত্রাসী, নারী নির্যাতনসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এই ওহাব আলী চৌকিদারের বিরুদ্ধেও থানা পুলিশের সখ্যতা অভিযোগ রয়েছে। রাজাপুর ইউনিয়নের প্রায়াত রাজে আলী চৌকিদারের পুত্র ওহাব আলী দীর্ঘদিন যাবত একই ইউনিয়নের চৌকিদারি করেন। এরশাদ সরকারের আমলে কোনমতে একবার ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই তিনি থানার দালালি ও পুলিশের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন বলে জানা যায়। এই চৌকিদার’ বর্তমানে সন্ত্রাসীদের সেলটার দেওয়ার ক্ষেত্রে খলনায়ক এর ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেন ওই নারীর আত্মীয়-স্বজনদের কেউ কেউ। ২১ ডিসেম্বর ২০২০ সালে ওই নারী জামিনে মুক্তি পেলে এই ওহাব আলী চৌকিদার ও সন্ত্রাসীরা আবারো জেলগেটে হানা দেয় ওই নারীকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য। পরবর্তীতে ওই নারীর আত্মীয়-স্বজনরা তাকে গোপনে জেলগেট থেকে নিয়ে একপ্রকার পালিয়ে আসেন বলে জানান ওই নারীর আত্মীয়-স্বজনরা। বর্তমানে ঐ নারী সন্ত্রাসী ও পুলিশের ভয়ে এদিক সেদিক পালিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলেও জানা যায়। কীভাবে এরকম দুজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও বিভিন্ন চাঁদাবাজি মামলার এজাহারনামীয় আসামিকে সাথে নিয়ে পুলিশ বিধিলংঘন করে একই সাথে নিরপরাধ নারীকে কোন প্রকার নারী পুলিশ ব্যতীত সন্ত্রাসী কায়দায় উঠিয়ে নিয়ে মিথ্যা অপহরণ মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন সেই প্রশ্নই এখন কাউনিয়াবাসীর মুখে মুখে। পুলিশের এমন ঘৃণিত কর্মকাণ্ড ব্যাপারে অনেকেই ক্ষোভে ফেটে যাচ্ছে কিন্তু পুলিশের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেনা।