বিশেষ প্রতিনিধিঃ পাবনার সাঁথিয়া থানার পশ্চিম করমজায় বিয়ের প্রলোভনে সাথী আক্তার (১৬) নামের এক কিশোরীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ৭/৯(১) ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনীয় ২০০৩,বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে ধর্ষণের অপরাধে সাঁথিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ১৫৮ । তবে অভিযুক্ত মুরাদ এখনো অত্মগোপনে রয়েছে।
জানা যায়, ২০১৮ইং সালে সিএন্ডবি বাজারের নির্মান সংলগ্ন বানিজ্যে মেলায় ঘুরতে গিয়ে বান্ধবীর মাধ্যমে পরিচয় হয় সাথী ও মুরাদের। এরপর দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক চলে তাদের মাঝে। এক পর্যায়ে মুরাদ গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং সাথীকে বিয়ের প্রলোভনে ফুঁসলিয়ে তুলে নিয়ে যায়। এরপর চন্দ্রা গাজিপুরে মুরাদের চাচাতো ভাই সাগরের সহায়তায় একটি বাসায় আশ্রয় নিয়ে সাথীকে(১৬) একাধিকবার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে সাথী(১৬) অসুস্থ হয়ে পড়লে চন্দ্রা বাসস্ট্যান্ড থেকে গাড়িতে তুলে দেয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতেও ধর্ষিতার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে ধর্ষকের পরিবার। তাদের অভিযোগ মুরাদ সেনাবাহিনীতে কর্মরত, তাছাড়াও তার আত্মীয়-স্বজন প্রভাবশালী হওয়ায় অসহায় ধর্ষিতা পরিবারটি হুমকির মুখে রয়েছে।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার তদন্ত ওসি(নিরস্ত্র) আবুল কালাম আজাদ জানান, মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। ধর্ষণের আলামত সংগ্রহের জন্য মেডিক্যাল রিপোর্টটি হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
তবে, মেডিক্যাল রিপোর্ট হাতে পেতে বিলম্বিত হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি কথা বলতে রাজি হয়নি।
ধর্ষিতার বাবা আজগার প্রামানিক বলেন, তার মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সেনাসদস্য এমন কাজ করেছে এটা দুঃখজনক। আমি এর সুষ্ঠু বিচার কামনা করছি। আমার মেয়ের চারিদিকে বদনাম ছড়িয়ে যাচ্ছে ,আমি ওই ছেলের এমন বিচার চাই যাতে করে তার মত আর কোন পরিবারে এমন ঘটনা না ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুরাদের প্রতিবেশী একজন বলেন, মুরাদের চরিত্র আগে থেকেই খারাপ। প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সে সেনাবাহিনীতে প্রবেশ করেছে। একাধিক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে সে তাদের সম্ভ্রমহানী করেছে।
ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে সাথীর ভাই শাকিলকেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে নানাবিধ হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে ধর্ষক মুরাদ। তবে, বিষয়গুলো জানাজানি করলে প্রাণনাশের ও হুমকি প্রদান করা হয় তাকে।
এ বিষয়ে শাকিল বলেন, আমি একজন ছাত্র মানুষ সবেমাত্র কলেজে পড়ি আমার বোনের সাথে মুরাদ যা করেছে তাতে আমি লোকের সামনে মুখ দেখাতেই লজ্জা পাই । এর মধ্যে আবার আমাকেও হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। আমি সেনাবাহিনীকে শ্রদ্ধা করি ,কিন্তু সেই সেনাবাহিনীতেই যে এমন নিকৃষ্ট শ্রেণীর মানুষের ও আর্বিবাব থাকে তাহলে আমরা ভরসা রাখবো কার উপর ! আমি এই ঘটনাটির সুষ্ঠু বিচার সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি কামনা করছি।
উল্লেখ্য. ধর্ষক মোঃ মুরাদ হোসেনের (২৫) বাড়ি পাবনা সাঁথিয়ার আমাইকোলা গ্রামে। তার পিতার নাম মোঃ আলম সরদার। তার জাতীয় পরিচপত্র নম্বর ৭৩৫৪৫৯৫১০৫,ক্রমিক নং ৮৫৫ । মামলা সূত্রে, সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে বান্দরবানে কর্মরত।
বিষয়টির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সচেতন মহল। দ্রুত এর সঠিক বিচার কামনাও করেছেন সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে ।
পিএসপিআর/এ্যাড.শাহেদ জামান -সুপ্রীম কোর্ট,ঢাকা।