নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আত্রাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে অনেক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
জেলার আত্রাই ও ছোট যমুনাসহ প্রায় সবকটি নদীর পানি এখন বিপদসীমার উপরদিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বেরিবাঁধ ভেঙে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ঘর বাড়ি ছাড়তে শুরু করেছেন বন্যা কবলিত অসহায় মানুষেরা।
এই জেলার মান্দা উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই নদীর পানি জোতবাজার পয়েন্টে এখন বিপদসীমার ১২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত মান্দা উপজেলায় সাতটি বাঁধ ভেঙে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ওই এলাকায় এখনো পৌঁছাইনি সরকারি সাহায্য। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বন্যার কবলে পড়ে আত্রাই ও রাণী (ফকিরনি) নদীর উভয় তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৫০ টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে এ দুই নদীর উভয় তীরের সাতটি বেড়িবাঁধ ও জোকাহাট দাসপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে।
এদিকে, পানির প্রবল চাপে আত্রাই ও রানী নদীর উভয় তীরের বনকুড়া, দক্ষিণ চকবালু, জোকাহাট, চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ি, শহরবাড়ি, ভাঙ্গীপাড়া, নুরুল্লাবাদ নিখিরাপাড়া, করাতিপাড়া, জোতবাজার, বাগাতিপাড়া, পশ্চিম নুরুল্লাবাদ, শামুকখোল, লক্ষীরামপুরসহ প্রায় ৫০ টি পয়েন্ট চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
আর কালিকাপুর, ফেরিঘাট, কয়াপাড়া, কামাকুড়ি, দোসতি প্রসাদপুরবাজার, পাজরভাঙ্গা, পলাশবাড়িসহ আরও বেশকিছু এলাকায় ভাঙনের উপক্রম দেখা দিয়েছে। বন্যায় মান্দা-আত্রাই আঞ্চলিক সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
এদিকে, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় দুর্গত এলাকার মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। এসব বন্যা দুর্গত এলাকার লোকজনেরার গবাদিপশু নিয়ে পরেছেন চরম বিপাকে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ বাধতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।