কেএম সবুজ(বিশেষ) প্রতিনিধিঃ ঢাকার কমলাপুর টিটিপাড়ার মেথরপট্টি বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ৪০টি ঘর পুড়ে গেছে। প্রাণঘাতী করোনার মধ্যে বস্তিতে আগুন লেগে ঘর পুড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনের উৎস সম্বন্ধে বস্তির বাসিন্দারা বা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। তবে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, গ্যাসের চুলা বা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট অথবা সিগারেটের আগুন থেকে ওই আগুন লাগতে পারে। আগুনের প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত পৌনে ২টার দিকে মতিঝিল থানাধীন কমলাপুর মেথরপট্টির বস্তির বাম পাশ থেকে আগুন লাগে।
এ সময় বস্তির বাসিন্দারা ঘুমিয়ে ছিলেন। চারদিকে সুনসান নীরবতা। আগুন লাগার চিৎকার ও চেঁচামেচি শুনে তাদের ঘুম ভাঙে। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় বস্তির পুরো এলাকা। আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকে। এসময় বস্তির বাসিন্দারা দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে খোলা স্থানে অবস্থান নেন। চোখের সামনে ঘর পুড়ে যাওয়ায় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের আহাজারিতে সেখানকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় ৪০টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। বস্তির মধ্যে ধোঁয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অক্সিজেনের মাক্স নিয়ে ভেতরে আগুন নির্বাপণ করেন। আগুন নেভাতে তাদের স্থানীয় জনতা সহযোগিতা করেন। জানা গেছে, বস্তিতে অধিকাংশ নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস। ঢাকার বিভিন্ন অফিসে ক্লিনারেরা ওই বস্তিতে বসবাস করে থাকেন। বস্তির বাসিন্দা পলাশ কর্মকার কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, গভীর রাতে আগুন লাগে। সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। বস্তিটি ঘনবসতি হওয়ার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তিনি আরো জানান, পরনের কাপড় ছাড়া আমার আর কিছুই নেই। করোনায় স্বর্ণের দোকান বন্ধ ছিল। ঋণ করে সংসার চালাচ্ছিলাম। থাকার ঘরও নেই। এখন কী হবে?
রিকশাচালক আলিম জানান, বস্তিতে অনেক অবৈধ গ্যাসের লাইন রয়েছে। এ ছাড়াও চোরাই বিদ্যুতের লাইন রয়েছে। সেখান থেকে আগুন লাগতে পারে। একটি চক্র অবৈধভাবে এই বস্তিতে এইসব লাইন সংযোগ দিয়ে তারা মোটা অঙ্কের চাঁদা তুলে। তিনি আরো জানান, রাতে যখন আমি ঘুমিয়েছিলাম তখন আমার স্ত্রী মাহাবুবা আমার হাত ধরে আগুন আগুন বলে টান দিলে আতঙ্কে আমি ঘর থেকে আমার ৭ বছরের বাচ্চাকে নিয়ে বের হয়ে আসি। আমার মতো লোকজন যে যেভাবে পেরেছে বের হয়ে এসেছে।
ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার মোসা. রোজিনা খাতুন জানান, বস্তির ঘরগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি লাগোয়া। এ ছাড়াও রাতে বাতাসের কারণে আগুনের তীব্রতা বাড়ে। তিনি আরা জানান, আগুনের প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের পর জানানো হবে আগুনের প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭