(বিশেষ) প্রতিনিধিঃ দেশের চলমান মহামারী নোভেল করোনাভাইসের কারণে সবকিছু লকডাউন করা হয়েছে। এর মাঝে চরম সমস্যায় পড়েছে দিন-মুজুর ,হতদরিদ্র পরিবারগুলো । দূরপাল্লা সহ নিয়ম মেনে সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ।যারা এসব যানবাহনের শ্রমিক তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ভাল আছেন তো? কি খাচ্ছেন,কোথায় পাচ্ছেন? তাদের খোঁজ খবর রাখছেন কি কেউ।মোটর শ্রমিকে যারা নিয়োজিত তাদের সহায়তা তো দূরের কথা খোঁজও নেওয়া হচ্ছে না।কোথাও কোথাও শ্রমিকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি জমা নেওয়া হয়েছে প্রায় ২৫ দিন আগে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শ্রমিকদের জন্য শ্রমিক নেতাদের বরাদ্দের সহায়তা দলীকরণ করা হচ্ছে। আবার জেলায় যারা আছেন তাদের মাঝে বিতরণ করেই শেষ হয়ে গেছে। তবে এটুকই কি আশ্বাস ? নাকি সন্ধান মিলবে কোন হৃদয়বান শ্রমিক নেতার? পাবনার বেড়া-সাঁথিয়ার ট্রাক,বাসের সহ শত শত শ্রমিকদের অভিযোগ যেন বেড়েই চলছে।পরিবার-পরিজন নিয়ে খাদ্য সংকটে ভারী কষ্টে দিন পার করছে অনেকেই।তাদের অভিযোগ সু-সময়ে অনেক শ্রমিক নেতাই সামনে এসে হাজির হোন নের্তৃত্ব দিতে। কিন্তু, কে আসল নেতা,কে বা জনদরদি, একজন খেটে খাওয়া শ্রমিকের প্রকৃত বন্ধু তার পরিচয় হয়তো দেশের এই ক্লান্তিলগ্ন ব্যতীত বুঝা যেত না।এসব খেটে খাওয়া শ্রমিকদের কষ্ট আর দূর্দশা দূরীকরণে একজন প্রকৃত শ্রমিক নেতার অভাব ও পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে জানান অনেকেই।
পাবনার বেড়া-সিএন্ডবি বাস্টস্ট্যান্ডের ট্রাক ড্রাইভার বাবলু বলেন,দীর্ঘদিন আমরা ঘরে বসে আছি। হাতে যে অর্থ ছিল তা এখন শেষ হয়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছে। শ্রমিক নেতাদের কাছে সাহায্য চাইলে তারা বলেন, জেলা থেকে না আইলে কেমনে দিবো।
এ বিষয়ে বেড়ার বাদশা ড্রাইভার বলেন, বলার মত ভাষা হারিয়ে ফেলেছি এই রোজার মাসে কেমনে যে দিন পারন করছি আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানেনা।আজ থেকে ২০ দিন আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি জমা দিয়েছি কিন্তু কোন ফলাফল পাচ্ছি না।
উল্লেখ্য, বিষয়ে পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক মোশারফফ হোসেন এর মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আজ থেকে প্রায় ২০ দিন আগে বেড়া-সাঁথিয়ার প্রায় ৭০০ শ্রমিকের কাছে থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি জমা নেওয়ার বিষয়ে পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সরদার মোঃ রইজ উদ্দিনের সাথে কথা বলে জানতে পারি, শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দের ত্রাণের আশ্বাসে তিনি এসব ডাইভিং কার্ড জমা নিয়েছিলেন। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট মহলের নিকট শ্রমিকদের দূর্দশার কথা তুলে ধরেও কোন সুরহা মিলছে না।
সামনে পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলা নেতারা যা দেন তা পৌরসভা আর নিজেদের এলাকার শ্রমিকদের দিযে শেষ করে ফেলেন। কিন্তু,আমরা প্রান্তিক এলাকার শ্রমিক নানা দিক থেকে অবহেলিত হচ্ছি।
সমসাময়িক ভাইরাসের কারণে দেশজুড়ে লকডাউন আর পবিত্র মাহে রমযান ও সামনে ঈদুল ফিতর । কিভাবে এই প্রতিবন্ধকতাকে পাড়ি দিবেন অত্র এলাকার শ্রমিকেরা ,এমন প্রশ্ন বেড়া-সাঁথিয়ার শ্রমিকদের।
শ্রমিকদের অভিযোগ দীর্ঘদিন মোটরশ্রমিকের সাথে তারা জড়িত।কিন্তু, কখনো এমন দুর্যোগের সম্মূখীন তারা হননি। এখন তাদের পরিবার নিয়ে যে অসহায়ত্বের গল্প যেন অজানাই থেকে যায়। লোকলজ্জায় প্রকাশও করতে চান না অনেকেই । কিন্তু আর কিছুদিন এমন সমস্যায় থাকলে বেঁচে থাকার আশাই যেন হারিয়ে ফেলবেন তারা। দ্রুত এসব শ্রমিকদের দুর্দশা নিরসনে সংশ্লিষ্ট মহলের সু- দুষ্টি কামনা করেছেন শ্রমিকেরা।